ধনঞ্জয়। |
গান শুধু কি তার বেঁধেই তোর কাজ ফুরাবে, |
নাগরিকদের পুনঃপ্রবেশ |
|
১। | এ কী কাণ্ড? |
২। | খুড়ো মহারাজ যুবরাজকে সমস্ত প্রহরীসুদ্ধ মোহনগড়ে নিয়ে গেলেন। এর মানে কী হল? |
কুন্দন। | উত্তরকূটের রক্ত তো ওঁর শিরায় আছে। পাছে এখানে যুবরাজের উচিত বিচার না হয় সেইজন্যে তাঁকে জোর করে বন্দী করে নিয়ে গেছেন। |
১। | ভারি অন্যায়। একে অত্যাচার বলে। আমাদের যুবরাজকে আমরা শাস্তি দিতে পারব না? |
২। | এর উচিত বিধান হচ্ছে– বুঝলে, দাদা– |
১। | হাঁ, হাঁ, ওঁদের সেই সোনার খনিটা– |
কুন্দন। | আর জানিস তো, ভাই, ওঁর গোষ্ঠে কিছু না হবে তো পঁচিশ হাজার গোরু আছে। |
১। | তার সব কটি গুনে নিয়ে তবে– কী অন্যায়। অসহ্য অন্যায়। |
৩। | আর ওঁদের সেই জাফরানের খেত, তার থেকে অন্তত পক্ষে বৎসরে– |
২। | হাঁ, হাঁ, সেটা দিতে হবে ওঁকে দণ্ড। কিন্তু এখন এই বৈরাগীকে নিয়ে কী করা যায়? |
১। | ওইখানেই থাক্ না পড়ে। |
[ নাগরিকদের প্রস্থান ] |
|
ধনঞ্জয়। |
গান ফেলে রাখলেই কি পড়ে রবে? (ও অবোধ) |
কুন্দনের পুনঃপ্রবেশ |
|
কুন্দন। | ঠাকুর, তোমার বাঁধনটা খুলে দি, অপরাধ নিয়ো না। তুমি এখনই বাড়ি পালাও। কী জানি আজ রাত্রে– |
ধনঞ্জয়। | কী জানি আজ রাত্রে যদি ডাক পড়ে সেইজন্যেই তো বাড়ি পালাবার জো নাই। |
কুন্দন। | এখানে তোমার ডাক কোথায়? |
ধনঞ্জয়। | উৎসবের শেষ পালাটায়। |
কুন্দন। | তুমি শিবতরাইয়ের মানুষ হয়ে উত্তরকূটের– |
ধনঞ্জয়। | ভৈরবের উৎসবে এখন শিবতরাইয়ের আরতিই কেবল বাকি আছে। |
নেপথ্যে। | জাগো, ভৈরব, জাগো! |
কুন্দন। | আমার ভালো বোধ হচ্ছে না, চললেম! |
[ উভয়ের প্রস্থান ] |
|
উত্তরকূটের দুইজন রাজদূতের প্রবেশ |
|
১। | এখন কোন্ দিকে যাই? নওসানুতে যারা ছাগল চরায় তারা তো বললে, তারা দেখেছে যুবরাজ একলা এই পথ দিয়ে পশ্চিমের দিকে গেছেন। |
২। | আজ রাত্রে তাঁকে খুজে বের করতেই হবে মহারাজের হুকুম। |
১। | মোহনগড়ে তাঁকে নিয়ে গেছে বলে কথা উঠেছে। কিন্তু অম্বা পাগলীর কথা শুনে স্পষ্ট বোধ হচ্ছে সে যাকে দেখেছে সে আমাদের যুবরাজ– আর তিনি এই পথ দিয়েই উঠেছেন। |
২। | কিন্তু এই অন্ধকারে তিনি একলা কোথায় যে যাবেন বোঝা যাচ্ছে না। |
১। | আলো না হলে আমরা তো এক পা এগোতে পারব না। কোটপালের কাছ থেকে আলো সংগ্রহ করে আনি গে। |
[ উভয়ের প্রস্থান ] |