Skip to content

এবার আসি – শক্তি চট্টোপাধ্যায়

সবাই বলতো পিঠে একটা কুলো বেঁধে নাও
চলো
পাঁচনবাড়ি উঁচিয়েই আছে
মারের ডগায় সদাসর্বদাই এগিয়ে যেতে পারবে
চলো
যেতে যেতেই এপাশ-ওপাশ দেখা যাবে
মাঝ বরাবর রাস্তা
রাস্তা বলতে সাপ-নাগালে উঠি-মুঠি আলপথ
তাতে পা দিলেই নজরালির তালপুকুর
মিটমিট করছে জমি-জেরাত

সুতরাং, চলো
যেতে যেতেই এপাশ-ওপাশ দেখা যাবে
উড়ো চাল চূড়ো বাড়ি
ঐ তো বদু বুড়োর ছিলো
আজ নেই ?
না |
না মানে, কবলা-কসরৎ দিগ্ ব্দিক ক’রে
মাগ-ভাতারে বদু বুড়ো সাপ্ টে খুইয়েছে সবই
আছে আছে
সব গেলেই সব যায় না
কিছু আছে
উনুনমাটির গা চিতিয়ে চওড়া হয়েই আছে
ছাই
শপথ করো
হারলেও কেন ছাড়বে না
শপথ করো, কেননা
–ঐখানেই তোমার জিৎ
তুমি মীমাংসার পক্ষপাতী
অবুঝের সঙ্গে লড়ে লাভ ?
ছিঃ

আজই তৈরি করেছি
সাঁকো
যেখানেই থাকো
একবার মন-মন কাজে এলেই হবে
এবারের উত্সবে
কানা-খোঁড়া সবাইকে চাই
হাতের লাটাই
আর ঘুড়ি
দু-তরফ, হা ভাইজান, থুড়ি
চারোতরফ মিলমিশই তো মেলা
সুতরাং
যেখানেই থাকো
একবার মন-মন কাজে এলেই হবে
এবারের উত্সবে
কানা-খোঁড়া সবাইকে চাই

চলো চলো
যেতে-যেতেই ইস্টিশান পাবে
ফেরা-ফিরতি লোক দেখবে বিস্তর
কিন্তু ঐ দেখা পর্যন্ত
মুখ-শোঁকাশুঁকি করার সময় নেই
জলের দরে জমি বিকোচ্ছে
হোগলাবনে মটকা মেরে পড়ে আছে রোদ্দুর
বাঁশঝাড়ে লুটপাট আবছায়া
তবু, ও-সব বিচার তোমার নয়
তোমার নয় ছাঁদনাতলা পোর্টার-পাখি
টিকিটের ওপর কেবলই যাত্রার ছাপ
দোলের রঙে রঙিন কুকুর পথে বেরিয়েছে
তোমার নয় মৌসুমি সমুদ্রের ভারাক্রান্ত প্রসববেদনা
তোমার নয় আদায়-তশিল, ধারকর্জ—
চলো চলো
যেতে-যেতেই ইস্টিশান পাবে
ফেরা-ফিরতি লোক দেখবে বিস্তর
কিন্তু ঐ দেখা পর্যন্তই

মই
কিংবা সিঁড়ি
দুজনেরই বাসনা বিচ্ছিরি
সুতরাং—চলো
যেতে-যেতেই ইস্টিশান পাবে
দাঁড়াবে
পা তুলে বক
আর কিছু না-হোক
ফলারটা বাঁধা
সা রে গা মা পা ধা
স্কুল-পাঠশালা বন্ধ
ফিরতে আনন্দ নয়, যেতেই আনন্দ

ভালো আছো ?
মন্দ কি ?
দুটোই একবগ্ গা প্রশ্ন
উত্তরের বদলে দক্ষিণ
নাকের বদলে নরুন
ঐ বদল কথাটাকেই সমর্থন করুন
এবার আসি
সাতগাঁয়ে আমিই এক চলার লোক
পথটাও কম নয় নিতান্ত
কেই বা জানতো
পথের দুপাশে খাড়াই
ইচ্ছে করে ছাড়াই
হাড়-মাস পেথ্বক করি
দুর্গা দুর্গা হরি

এবার আসি
সুতরাং, এবার আসি ||

[A]

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।