Skip to content

মিষ্টিগুড়ের ইস্টিশানে – শক্তি চট্টোপাধ্যায়

এক পাড়াগাঁ থেকে আরেক পাড়াগাঁয় উঠে এলুম
রেলগাড়ি থামলো এসে মিষ্টিগুড়ের ইস্টিশানে
হাতে রইলো টোপর-ঝোপর, বড়ি-বেগুন, দাদুর লাঠি
লটবহর বলতে আরশুলা আর পোকায় কাটা প্রচ্ছদছেঁড়া নোংড়া বই
মনে রইলো টেঁ-টুঁই শঙ্ঘচিল বাগানভর্তি নারকোল গাছের
. মাথায় ঝড়
উশিখুশি বাদলের দিন, বাদাবনের হাঁ-করা আলোয়. .এইসব |

কলকাতায় চলে এলুম প্রাণপণ ফাঁকা থেকে একটা ঝাঁকার মধ্যে যেন
ঐ আলু পটল মটরশাকের মনের সঙ্গে মন মেলাতে চলে
. এলুম কলকাতায়
মাত্র ওটুকুই আজ প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্কে, গা ঘষাঘষি
বাকিটা নাক-বরাবর দেয়াল গুমে-ভেজা জবড়জং বাড়িঘর
আর মাটি বিক্কিরি ক’রে যায় ঠিক দুক্কুরের ফিরিঅলা
বুড়ির মাথায় পাকা চুল, দোরগোড়ায় ঘন্টা নাড়ে পাটনাই ছাগল
কোথায় এলম্ হে-এ, এ কোথাকে এলম্
হর-ঘরকে ঝি-ঝিউড়ি গলি ভেজায় ঝেলম্
অর্থাৎ কিনা, মা-গঙ্গের জল রাস্তার দুপাশে নামছে ঝোরায়
পাথরের খোরায় দম্বল
মা রাঁধতেন অন্বল
চপাৎ-সপাৎ টানতুম | টানতে-টানতে আঙুলগুলো
. বাধতো টাগরায়

একবার আগ্রায় গেলুম পূজোয়
পেতনের ওপর কুঁজোয় থাকতো ফটিক জল
মা বলতেন, খোকা, জানিস, ঐ জলের নাম জীবন
ঢোক্-ঢোক্ জল খা, খাবার-দাবার সময়ে খাবি
যখন যা পাবি, এখানে কেউ চায় না
আরশিকে বলে আয়না—

খোকা, ভদ্রতা বজায় রাখবি…
এক পাড়াগাঁ থেকে আরেক পাড়াগাঁয় উঠে এলুম
রেলগাড়ি থামলো এসে মিষ্টিগুড়ের ইষ্টিশানে ||

[A]

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।