Skip to content

মল্লিকার মৃতদেহ – নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী

উদ্যানে গিয়েছি আমি বারবার। দেখেছি, উদ্যান
বড় শান্ত ভূমি নয়। উদ্যানের গভীর ভিতরে
ফুলে-ফুলে
তরুতে-তরুতে
লতায়-পাতায়
ভীষণ চক্রান্ত চলে; চক্ষের নিমেষে খুন রক্তপাত
নিঃশব্দে সমাধা হয়। উদ্যানের গভীর ভিতরে
যত না সৌন্দর্য, তার দশ গুণ বিভীষিকা।

উদ্যানে গিয়েছি আমি বারবার। সেখানে কখনও
কেহ যেন শান্তির সন্ধানে আর নাহি যায়।
যাওয়া অর্থহীন; তার কারণ সেখানে
কিছু ফুল
নিতান্ত নিরীহ বটে, কিন্তু বাদবাকি
ফুলেরা হিংসুক বড়, আত্মরূপরটনায় তারা
যেমন উৎসাহী, তত বলবান, হত্যাপরায়ণ।

উদ্যানে গিয়েছি আমি বারবার। সেখানে রূপের
অহঙ্কার ক্ষমাহীন। সেখানে রঙের
দাঙ্গায় নিহত হয় শত-শত দুর্বল কুসুম।
আজ প্রত্যুষেই আমি উদ্যানের বিখ্যাত ভিতরে
মল্লিকার মৃতদেহ দেখতে পেয়েছি।
চক্ষু বিস্ফোরিত, দেহ ছিন্নভিন্ন, বুক
তখনও কি উষ্ণ ছিল মল্লিকার?
কার নখরের চিহ্ন মল্লিকার বুকে ছিল,
কে হত্যা করেছে তাকে, কিছুই জানি না।
কিন্তু গোপালের লতা অতখানি এগিয়ে তখন
পথের উপরে কেন ঝুঁকে ছিল?
এবং রঙ্গন কেন আমাকে দেখেই
অত্যন্ত নীরবে
হঠাৎ ফিরিয়ে নিল মুখ?

আমার বাগানে আরও কতগুলি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হবে?

[A]

1 thought on “মল্লিকার মৃতদেহ – নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী”

  1. কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী আমার অত্যন্ত প্রিয় কবি। আমি ওনার বাড়িতে গিয়েছি ওনার পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ নিয়েছি। উনি আমাকে আশীর্বাদ করেছেন আমি মাথা পেতে গ্রহণ করেছি। আমার স্বামীর মৃত্যুর পর বড় একা হয়ে গেছি শ্রদ্ধেয় কবি। লেখালেখি করি কিন্ত প্রকাশের সম্ভাবনায় সেই শত্রুতা। আমি সত্যিই শত্রু দ্বারা পরিবেষ্টিত। আপনাকে অসংখ্য প্রণাম শ্রদ্ধেয় সম্মানিত কবি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।