Skip to content

সেই ছেলেটা – আজিজুল হক

****সেই ছেলেটা****
আজিজুল হক

হঠাৎ একদিন দেখা হল
রিয়াজের সাথে,
রিয়াজ,আমার বন্ধু,
হ্যা ,বন্ধু বটে।
বরাবরেই আমাদের থেকে অনেক টা এগিয়ে থাকা ছাত্র।
আমরা ও কে হিংসে করতাম,
রাগ হত ওর প্রতি ,
কি করে এত নম্বর পেত,জানতাম না হাজার চেষ্টা করেও।
ওর জন্যই কত দিন যে বাড়িতে বাবা ,মায়ের বকুনি খেতে হয়েছে,
এমন কি মার..
ও কিন্তু আমাদের কাউকেই হিংসে করত না, বরং ভাল ভাবে মিশত,খেলত আমাদের সঙ্গে..
ধীরে ধীরে আমরা ওর ফ্যান হয়ে উঠলাম।
সময়ের তাড়নায়,জীবনের তাড়নায় কখন যে আমাদের ছাড়াছাড়ি হল,
সে দিকে খেয়াল ছিল না মোটেই।
অনেক দিন পরে শুনেছিলাম
রিয়াজ এখন সরকারি অফিসের বড় কর্তা..
দেখা হয় নি কখনও..
হটাৎ একদিন ইচ্ছে করেই খোঁজ নিলাম রিয়াজের ..
সব ছেড়ে রিয়াজ নাকি নিরুদ্দেশ..
সুরুপা কে ভালোবেসেছিল রিয়াজ।
স্বপ্ন দেখত নুতন একটা মননের,
মিছিলে হেঁটেছিল রিয়াজ..
সমাজতন্ত্রের অলীক স্বপ্ন দেখত রিয়াজ..
কত আইন ভাঙ্গা মিছিলে মুষ্ঠিবদ্ধ হাত দুটি উঁচিয়ে উঠতো তার..
চা বাগানের শ্রমিক থেকে সমাজের সর্বত্র ছিল তার অবাধ বিচরণ..
পরে শুনেছি , এ ব্যাপারে দলেও তার প্রতিহিংসাপরায়নের অভাব ছিল না …..
একদিন সেখান থেকেও সরে এসেছিল সে,
সুরুপার কাছে চেয়েছিল শেষ আশ্রয়..
অফিসের বড় কর্তা রিয়াজের জায়গা হয় নি সুরূপার হৃদয়ে আর..
সুরূপা ঘর বেঁধেছিল তার নুতন স্বপ্ন কে সাজাতে নুতন প্রেমিকের হাত ধরে।
রিয়াজের স্বপ্নে নিজেকে ভাসাতে চায়নি সে..
বড্ড বাস্তববাদী মেয়েটি হাত ধরেছিল কোন এক অজ্ঞাত ব্যবসায়ীর।
রিয়াজ ভালোবেসেছিল সমাজতন্ত্র,
ভালোবেসেছিল তার বড্ড স্বপ্নের সুরুপা কে..
হারাতে চায়নি সে দুজনকেই..
আজ সব হারিয়ে নিরুদ্দেশ রিয়াজ ভুগছে দুরন্ত ক্যান্সারে..
প্রত্যাশা, হতাশা, নীতি – দুর্নীতি,
মিছিল মিটিং,লুটপাটের ভোট সর্বত্র এই ক্যান্সারে মুক্তি খুঁজছে রিয়াজ দোজখ আর বেহেশ্তের অন্তহীন লড়াইয়ে..
লাশকাটা ঘরে তখন একা বসে সুরূপা ,
তার পাশে মুখ লুকিয়ে কাঁদছে সমাজতন্ত্র!!!
©আজিজুল হক
১৯/৪/২৩

মন্তব্য করুন