Skip to content

রহস্যময় লীলা ক্ষেত্র – সুভাষ চন্দ্র দাস

শিরোনাম : রহস্যময় লীলা ক্ষেত্র
কলমে : সুভাষ চন্দ্র দাস (কাব্য প্রিয়)

পাশের বিল্ডিংয়ের সাত তলা বাসায়, সাত তলায় বসবাসরত মা, বাবার আদরের একমাত্র মেয়েটিকে ছেলেপক্ষ আজ আংটি পড়াতে এসেছে। পুরো বাসাটা মানুষে ঠাসা, মেতেছে উৎসবে সবাই।

আর তার নিচে অর্থাৎ ছয় তলায় বুড়ো-বুড়ি দুজনেই অসু-স্থ। তাদের কোনো ছেলে, মেয়ে নেই। বুড়ো কাকুটা একটা সেভেন আপ কোম্পানিতে নৈশ প্রহরী হিসেবে কাজ করেন, হঠাৎ করে শীত পড়ার কারণে তারা দুজনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওষুধ কিনে দেয়ার লোক পর্যন্ত নেই। দুপুরে বিল্ডিংয়ের মেইন গেইটের সিকিউরিটি গার্ডকে অনুরোধ করে খুুব জরুরী কিছু ওষুধ আনিয়ে নিয়েছে।

পাঁচতলার মর্জিনা ব্যাগ গোছাচ্ছে,চলে যাবে আজ। সংসারটা বোধহয় আর টিকলো না। মর্জিনা ও তার স্বামী এবং দুই সন্তান নিয়ে তার ছোট পরিবার। মর্জিনা একটি সুতার কোম্পানিতে কাজ করে আসছে পাঁচ বছর ধরে, তার স্বামী দিন রাত জুয়া খেলা নিয়ে বসে থাকে, তাই সংসারে আয়ের চেয়ে ব্যয়ের পরিমাণ বেশি। মর্জিনা কয়েক বছর ধরে এটা বুঝিয়ে আসলেও তার স্বামী মকবুল বুঝার পাত্র নয়।এই কষ্টে আজ মর্জিনার মর্জি ভালো নেই তাই সে সিদ্ধান্ত নিলো সে মকবুল মিয়াকে ছেড়ে চলে যাবে নয় বছর ধরে করে আসা তাদের সংসারে আছ বিচ্ছেদ হয়ে যাবে।

দীর্ঘ বারো বছর পর চারতলার দম্পতির সজীব ও তুলির ছেলে সন্তান হয়েছে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছে আজই। চারতলার নিস্প্রাণ দেয়ালগুলো এর আগে ওই ঘরে এত আনন্দ দেখেনি।

তিনতলার এতিম ছেলেটা হাই ভলিউমে গান ছেড়েছে। প্রতিনিয়ত তার মন মেজাজ খারাপ থাকে কারণ শুনেছি ছোটবেলায় রোড এক্সিডেন্টে তার মা ও বাবাকে হারিয়েছে। মাঝে মাঝে ওর মন বেশি ভালো হলে পুরো বাড়ি কাঁপিয়ে গান শুনে।

এরই মাঝে একটু আগে খবর এলো দু তলার চাচা দীর্ঘদিন আইসিইউতে থেকে আজ মা*রা গেলেন।

আর ঠিক নিচতলায় আমার বাসা, এবার বলি নিজের কথা। বর্তমান যুগে পাওয়া না পাওয়ার গল্পে নিজের প্রিয় মানুষটিকে চিরসাথী হিসেবে পেয়ে অনেক ধন্য হয়ে গেলাম, যদি ও পারিবারিক ভাবে আমাদের বিয়েটা হয়নি। পারিবারিক ভাবে বিয়েটা হলে আমাদের মতো সুখী আর কেউ হতো না। দিন বদলের পালায় হয়তোবা কোনো একদিন আমার স্ত্রী তার বাপের আলয়ে আমাকে নিয়ে প্রবেশ করবে সেই স্বপ্নে সে রোজ প্রার্থনা করে ঈশ্বরের নিকট।

আহ জীবন!! একই ছাঁদের নিচে কত গল্প, কত কাহিনী।

মন্তব্য করুন