Skip to content

যেজন প্রেমের ভাব জানেনা-রমেন মজুমদার

যেজন প্রেমের ভাব জানেনা
—ছোটগল্প,রমেন মাজুমদার,24/07/2023
শব্দসংখ্যা–523
—-
মেয়েটাকে আমার ভীষণ ভালোলাগে।
এক জীবনের পরেও যে আর এক জীবন আছে,রয়েছে সে কথা ভাববার অবকাশ পাইনি,হয়নি।
যৌবনের তাড়নায় সবকিছু তাৎক্ষণিক উবে গেছে হঠাৎ আকাশে উড়ন্ত মেঘের মতোই…
এমন বুঝি সকলের ক্ষেত্রেই হয়।নিজেকে দিয়ে বিশ্লেষণ করলে তার মধ্যে অন্যতম ভাগের পার্সেন্টেজ হিসেব করলে নিরানব্বই শতাংশ মিলে যাবে আমার ভাবনার সাথে।
যৌবনে কার না প্রেম আসে ?
যার আসেনা সে হয় দেবতা,না হয় পশু!
ভাষা যাই হোক এর চাইতে সংযত করে বলা কঠিন।
তাই বলছিলাম যে, মেয়েটিকে আমার ভালোলাগত,ভালোবাসতাম,আজও…
এই মেয়েটি এখন আর মেয়ে নেই।
হয়েছে মেয়ের মা,
তারপর দাদী, ঠাকুরমা,একটা কিছু;
তবুও যে ভালোলাগার খতিয়ান আমার মত আউলাবাউলা লোকের অভাব নেই।
জীবন যেখানে স্রোতের মত ভাসমান,সেখানে চড়া পড়বে,এতে অধিক ভাববার দরকার নেই। লজিক্যালি এটা চিরন্তন সত্য বলেই অনুমেয়।

মেয়েটি আমার কল্পনার এক দুরন্ত দুর্বার ছবি। যাকে কল্পনা করি,তাকেই দেখি,তাকেই ভালোবাসি।
ধরা যাক আমার কল্পনার হতে শ্রীদেবী,শ্রীপর্ণা,শ্রীময়ী,শ্রীদুর্বাসা,শ্রীশিখা,শ্রীরেখা,শ্রীদুর্গা,শ্রীকাজল,শ্রীমালতি,
শ্রীশ্যামলী, শ্রী–শ্রী—কিম্বা বিশ্রী !!
ইত্যাদি ইত্যাদি।
ভালোবাসার নায়িকার অভাব হয়না,চোখের তাড়ায় কর্ণিয়ার দৃষ্টিশক্তির মধ্যে নিগূঢ় একটা শক্তি থাকবে,যার সাহায্যে কল্পনা করলে চোখ খুলে যাবে।তারপর মগজ থেকে সার্চিং লাইট ধার করে তাকে জ্বালাতে হবে আপন ভাবনার গতিতে;তবেই তাকে দেখতে পাব, সে আমার মাকালী, মাদুর্গা নাকি প্রেয়সী ঊর্বশী, নাকি প্রিয়তমা,নাকি হতচ্ছাড়া
ভাগ্যহীনা ঘরের অর্ধবোকা বউটা (?)

ধরলাম যাকে আল্পনা,কল্পনাদ্বারা ভালোবেসে জীবন সঙ্গিনী করলাম। সে এলো স্বামীর ঘরে,তারপর প্রকৃতির নিয়মে ডিম পারল,বাচ্চা হলো। এখানেও একটা অযৌক্তিকভাবে ভাষার অবতারণা করা হল। ঘরের বউ কী আবার ডিম পাড়ে ?
হ্যাঁ, তবে ডিম পাড়ে পশুপাখি,এটা সত্য।
স্ত্রীজাতি মা হয় দেবীতুল্যা…
তাদের কটাক্ষ করে পাপ কামাই করলাম!
তবুও পাপের মধ্যে থেকে স্ত্রী ও স্ত্রীদের বিষয়ে কিছু চিন্তার খাতা খুলে হিসাব মেলাতে যাবেন না কেউ ভুলেও।
আচ্ছা ধরুন আমি ভুলকরে স্বপ্নের মধ্যে বিয়ে করলাম আমার অভাবের অসচ্ছল প্রেমিকা শ্রীপর্ণাকে। সে আধপোড়া রুটি খেয়ে আমার সাথে জীবন বাঁধল।
তাকে ভুলেও আপনার গোপন কথাটি কহিবেন না,কইবেন না বলবেন না।
এই স্ত্রী জাতিরা আপনাকে দেবতার আসনে বসিয়ে পুজো করতে পারে,আবার উল্টো আপনাকে লাথিও মারতে পারে।
সবটাই নির্ভর করবে আপনার ব্যবহারের উপর।
স্ত্রীজাতির অনেক ক্ষমতা।
আপনার জীবনের সবচেয়ে ভালো বা মন্দের স্বাক্ষী কিন্তু সেইই…..
তাদের এতো ক্ষমতা আছে যে,আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না।
ঘাটেবাধা জাহাজের নোঙরের রশি যেমন শক্ত,তেমনি তারা সময়ের রূপে পরিবর্তন করতে পারে নিজের ইচ্ছাটাকে।
আপনি কি জানেন যে জাহাজের রশি তৈরি হয় নারকেলের আঁশদ্বারা।
সময়ের খতিয়ান মেয়েমানুষ হতে পারে তেমনি।
নারকেল পাকার আগে তার জলপান করা যেমন সৌন্দর্য্য ও তৃপ্তিদায়ক;
তেমনি নারীর যৌবন সৌন্দর্য ডাবের জলের মতোই সুস্বাদু ও তৃপ্তিদায়ক!
একজন নারী সময়ে মা,
সময়ে বোন,সময়ে ভগ্নি,সময়ে সে স্ত্রী ।
এদের সকলের মধ্যেই প্রেম আছে। প্রেমের সিঁড়ি বা ধাপ আছে।
শ্রেণীমত প্রেমের রঙ পাল্টে যায়।
নারী ইচ্ছে করলে তার প্রেমদ্বারা আপনার জীবনকে পরিপূর্ণ করে তুলতে পারে ভালোবাসায়..
আবার সেই নারীরাই কিন্তু পারে আপনাকে ধ্বংস করে দিতে ।
তা হলে নারীর দোষ-গুণের ক্ষমতা সীমাহীন।
এই জন্যই বলি যেজন প্রেমের ভাব জানেনা,যার সাথে লেনদেন করতে নেই।
“নারীকে প্রাণদিয়া ভালোবাসিও, কিন্তু তাহার নিকট আপনার অধিক মূল্যমানের গোপনকথাটি শেয়ার করিও না ।
আবার তাহার দ্বারাই আপনার ক্ষতি সাধিত হইতে পারে।”
নারীর অসীম ক্ষমতা বলেই নারীকে অধিক ভালোবাসি,ভালোবাসতাম, আজও…।
প্রেমহীন জীবনের কোন মূল্য আছে বলে আমার মনে হয়না।
তাইতো আমি কল্পনার নিরিখে আমার ভালোবাসার মানুষটিকে অথৈ সায়রে আজও খুঁজে বেড়াই।
কল্পনায় আঁকিবুঁকি করি নারীমুখ নিয়ে।।
শব্দসংখ্যা–523
সমাপ্ত………

1 thought on “যেজন প্রেমের ভাব জানেনা-রমেন মজুমদার”

  1. রমেন মজুমদার

    আপনাদের কবিতা ককটেল
    আমাকে আকর্ষিত করেছে
    এখানে নিজের মুক্তমনের আলোতে
    আলোকিত হয়ে ওঠা যায়।
    দীর্ঘবাহিত পথ অতিক্রম করুন
    কবিতা ককটেল,সেটাই কামনা করি।।

মন্তব্য করুন