Skip to content

মিছিল–তাপস ঠাকুর

যতবার হয়েছে বাজেট,
অদৃশ্য চোর কেটেছে জনতার পকেট।
হরিলুট হবে ভেবে, কেউ কেউ গোফে দেয় তাও,
নেতারা কি আর চিল্লায় শুধু ফাও!

নেতার শতবর্ষ জন্মদিনের উৎসব,
স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তীর রঙিন আয়োজন।
সবই ওদের কাছে নিছক অনুষ্ঠান বলেই মনে হয়।
ওরা কারা? ওরা এই মাটির সন্তান।
ওদের দিন কাটে ফুটপাতে, ডাস্টবিনে,
ময়লার বস্তা কাধে।
কখনো খাবারের দোকানে, মটর গ্যারেজে,
সারাদিন ফোট ফর্মাইস মেনে।
কখনো ব্যস্ত শহরের রাস্তায়,
মিনিবাস-মেক্সির হেল্পারি করে,
আধপেট খেয়ে না খেয়ে।

বড় বড় পত্রিকার খবরে,
ঝড় তোলা টকশোতে,
নাইট ক্লাবের মদ্যপ আড্ডায়,
প্রধানমন্ত্রীর নাতনির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে,
কিংবা রাষ্ট্রপতির বিবাহ বার্ষিকীতে,
কোথায়ও তাদের কোন অংশগ্রহণ নেই।
অথচ রাষ্ট্রে তাদের একটি নিরাপদ বাসস্থান থাকবার কথা ছিলো, এই পতাকায় ছিলো-
দুরন্ত আসমানে ঘুড়ি উড়াবার স্বপ্ন।

রাষ্ট্রের বদলে রাষ্ট্র এসেছে,
পতাকার বদলে পতাকা,
নেতার পরে নেতা আসে,
আসে না একটা লাল স্কুল ব্যাগ।
বকৃতাবাজ নেতা, দুর্নীতিবাজ আমলাদের সন্তানেরা-
বিদেশে যায়, সেখানে উচ্চব্বিত্ত খাদ্য,
শিক্ষা,চাকরি, ব্যবসা ভবিষ্যতের সুব্যবস্থা হয়।
আর অগণিত শিশুরা পরে থাকে পথে ধুলোয়।

আমি কতবার বলেছি মিছিলে এসো,
মিছিলে না গেলে মুক্তি নেই কারোর।
নিরাপদ খাদ্য,বেকারত্ব, নিরাপদ ভবিষ্যৎ,
এসবের জন্য চাই মিছিল।
১৬-কোটি মানুষের অবিচ্ছেদ্য এক মিছিল,
৩২-কোটি মুষ্টিবদ্ধ হাত।
চাই স্লোগান মুখরিত উত্তাল রাজপথ।
মিছিলে না গেলে, বন্ধ হয়ে যাবে মুক্তির দোকান।

আমি কতবার কবিতার জন্য জেল খেটেছি,
অথচ আমি কবিতা লিখিনি কোনদিন,
কবিতা পড়িনি, জানিনি।
শুধু ডাস্টবিনে অসহায় পরে থাকতে দেখেছি,
স্কুল ব্যাগের পরিবর্তে দেখেছি ময়লার বস্তা-
জীর্ন অভিশপ্ত জীবনের বোঝা কাধে একটি শিশু।
প্রিজন সেলে, কারাগারের অন্ধ স্তুপে বন্দী যার ভবিষ্যৎ।
রাষ্ট্র কি তবে কারাগার, প্রিজন সেল!
রাষ্ট্রের বদলে রাষ্ট্র এসেছে,
পতাকার বদলে পতাকা।
নেতার বদলে নেতা।
আসেনি মুক্তির কবি,
মুক্তির কবিতা।
আর কোন কাব্য নয়,
এবার স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হোক রাজপথ।
লাত্থি মার, ভেঙ্গে ফেল ঐ শত বছরের বন্ধ কপাটের খিল,
শ্লোগানে স্লোগানে এগিয়ে যাক মুক্তির মিছিল।

মন্তব্য করুন