পর্বঃ৩
রানুর মৃত্যূর খবর শুনে আমার চারপাশ কেমন যেন অন্ধকার হয়ে আসতে লাগলো।এইতো সেদিনও ওকে খুব হাসি খুশি দেখেছিলাম।বিন্দুমাত্র কষ্টের ছাপ দেখিনি মুখে।চোখের পানিকে আটকে রাখার সাধ্য হলোনা আমার।কোনোমতে ড্রেস চেঞ্জ করেই বের হয়ে পড়লাম শেষবারের মতো মানুষটাকে দেখতে। পৌছে দেখি বাড়ির উঠানে মাদুরের উপর শুয়ে আছে রানু,আমার বেস্ট ফ্রেন্ড।একটা চাদর দিয়ে শরীর মুখ ঢেকে রাখা। পাশেই একজন মহিলা বসে আছে।কাঁদতে কাঁদতে গিয়ে অনুরোধ করলাম, আন্টি মুখটা একটু দেখাবেন? দেখলাম মানুষটা যেন গভীর ঘুমে আছে।কপালে আজও সেই কালো ছোট্ট টিপ,মায়াবি মুখ। যেনো এখনি উঠে আমাকে বলবে, “এতো করে বলতাম আমাদের বাসায় চল, আর তুই আজকে আসলি রিয়া?”
রানু চলে যাওয়ার পর স্কুল আর ভালো লাগতো না। সবার সবকিছু ঠিকই আছে, শুধু আমার পাশে রানু নেই। স্কুল গেট এর সামনে কেউ অপেক্ষা করেনা আমার জন্য। দেরি করে স্কুলে গেলে কেউ জায়গা ধরে রাখে না এখন।স্কুল কামাই করলে এখন কারো অভিমান ভাঙাতে হয় না।পড়া করে না গেলে কেউ ধমকের সুরে বলেনা, তোর সাথে কিন্তু মিশবো না এরকম করলে। জানিস রানু, আমি আজও ক্লাসের সেই ফাস্ট বেঞ্চটাতে বসে জায়গা রাখি তোর জন্যে। এক পলকে মাঠের দিক চেয়ে থাকি, এই বুঝি তুই আসলি। কিন্তু কই? তুই তো আর আসিস না।আচ্ছা এটা তো কোনো দুঃস্বপ্ন হলেও পারতো বল।অন্তত তোকে হারাতে হতো না।ক্লাসে অন্যসবাই যখন ফ্রেন্ডদের সাথে আড্ডায় ব্যস্ত, তখনো আমি তোর অপেক্ষায় থাকি।আমার অপেক্ষার দিন আর ফুরায় না। 🙂