Skip to content

বীজ মন্ত্র — নীল অঞ্জন

সেদিন হঠাত্ই মুঠোফোনে
কি জানি কি ভেবে অথবা না ভেবেই,
জানতে চেয়েছিলে কোথায়?
আমি বলেছিলাম ছড়িয়ে দিয়েছি!
হ্যাঁ ঠিক। একটুও মিথ্যে বলিনি তোমাকে,
কতবার কতভাবে আমি
ছড়িয়ে দিয়েছি নিজেকে!
যেমন নির্লজ্জ বীজ ছড়াতে ছাড়াতে
বড় হয় সোনালী ফসলের ক্ষেত;
দু’হাতে মোহন খই ছড়াতে ছড়াতে
বিসর্জনের প্রস্তুতি সারে দূর্গা।
বিমর্ষ সফেদ পালক ছড়াতে ছড়াতে
উড়ে যায় অবাক, উদাসী পায়রা;
আমার সমগ্র জীবনের সব রঙ
আমি তেমনি ছড়াতে ছড়াতে এসেছি।
তোমাকে কখনো বলিনি হয়তো,
মনে মনে কতবার আমি সবুজ বৃক্ষ হয়েছি
বাঁচতে চেয়েছি সুদীর্ঘকাল!
কিন্তু পাঁজরে জমাতে শিখিনি কিছুই,
অথবা চাইনি জঞ্জাল বাড়াতে।
হাতের আঙুলে কিছুই রাখিনি ধরে
আমাদের চারুপ্রেম, এমনকি তোমাকেও!
মাটি হতে আমারই দেহের সবুজ পল্লব,
ঝুলে থাকা জীবিত বা মরা ডাল, স্মৃতি;
অথবা কুমুদ দীর্ঘনিঃশ্বাস
কিংবা মালা হতে পারতো এমন বকুল!
কুড়িয়ে নেইনি একটিও ছেঁড়া পাতা,
বাতাসে উড়িয়ে দিয়েছি প্রেম;
ঘাস ফুল, ভিতর ছড়িয়ে দিয়েছি বেদনা।
শিমুল তুলোর মতো মহার্ঘ কবিতা,
উড়িয়ে দিয়েছি যা ছিল হৃদয়ে অভিমান;
রোদের পরতে মাখিয়ে দিয়েছি হাসি
বৃষ্টিকণার সাথে দু’ফোটা চোখের শিশির!
কখনো গুছিয়ে রাখিনি নিজেকে,
ছড়িয়ে দিয়েছি সব রাতের জ্যোৎস্নায়।
আমার নিজের বলতে যা কিছু, যা ছিল
রবিঠাকুরের গান, বৃষ্টির ফোঁটা, তুমি;
খর রোদ্দুর, বাঁধ ভাঙা প্রেম, প্রবল তৃষ্ণা
শব্দে বর্ণে তাও অজর কবিতায়!!

মন্তব্য করুন