Skip to content

পুরাণের উপাখ্যান

দেবতাদের গুরু বৃহস্পতি তার ভ্রাতৃবধূ মমতাকে ধর্ষণ করেন। বৃহস্পতির ভাই ছিলেন উতথ্য ঋষি। তার স্ত্রী হলেন মমতা। একদিন বৃহস্পতি কামাতুর মনে মমতার কাছে উপস্থিত হন। তাকে দেখে মমতা জানান তিনি তার স্বামী অর্থাৎ বৃহস্পতির দাদা উতথ্য ঋষির দ্বারা গর্ভবতী হয়েছেন। এক গর্ভে যেহেতু দুই সন্তানের স্থান হওয়া অসম্ভব এবং বৃহস্পতিও অমোঘরেতাঃ তাই মমতা বৃহস্পতির সাথে মিলিত হতে অসম্মতি জানান। মমতা বৃহস্পতিকে বলেন,

“হে মহাভাগ! আমি তোমার দাদার দ্বারা গর্ভবতী হয়েছি, অতএব সঙ্গম করার ইচ্ছা সংবরণ কর। আমার গর্ভের কুক্ষির মধ্যেই উতথ্যের পুত্র ষড়ঙ্গবেদ অধ্যয়ণ করছে। তুমিও অমোঘরেতাঃ ; এক গর্ভে দুইজনের সম্ভব নিতান্ত অসম্ভব। আজ এই দুষ্কর্ম হতে নিবৃত্ত হও।”

মমতার অসম্মতি সত্বেও দেবগুরু তাকে ধর্ষণ করেন। বৃহস্পতিকে ধর্ষণ করতে দেখে মমতার গর্ভস্থ শিশু বলে ওঠে, “ভগবন! মদন-আবেগ সংবরণ করুন। স্বল্পপরিসরে উভয়ের সম্ভব অত্যন্ত অসম্ভব। আমি পূর্বে এই গর্ভে জন্মগ্রহণ করেছি, অতএব অমোঘরেতঃপাত দ্বারা আমাকে পীড়িত করা আপনার নিতান্ত অযোগ্য কর্ম হচ্ছে, সন্দেহ নেই।”

বৃহস্পতি গর্ভস্থ শিশুটির কথায় কর্ণপাত না করে তার নিকৃষ্ট কাজ করতে থাকেন। গর্ভস্থ শিশু বৃহস্পতির এই অন্যায় আচরণ দেখে নিজের পা দিয়ে শুক্রের পথ রোধ করেন।বীর্য মমতার গর্ভে প্রবেশ করতে না পেরে মাটিতে পতিত হয়। এতে রেগে গিয়ে বৃহস্পতি সেই শিশুটিকে অন্ধ হওয়ার অভিশাপ দেন।পরে ওই শিশুটির নাম হয় দীর্ঘতমা।

[কালিপ্রসন্ন সিংহ কর্তৃক অনুবাদিত মহাভারত / আদিপর্ব / ১০৪ অধ্যায়]

মন্তব্য করুন