Skip to content

পরকীয়ার পরাগ বিদীর্ণ -রমেন মজুমদার

পরকীয়ার পরাগ বিদীর্ণ
—-ছোটগল্প,কলমে-রমেন মজুমদার,16/07/2023.
—সাংখ্যা- ৮০০
স্কুল পাস করে তানিয়ার আর পড়া হয়নি।
বাপমরা মেয়ের দায়িত্ব নিয়েছিল দুর্সম্পর্কের এক মামা। মায়ের পিসতুতো ভাই। সংসার চালানোর মত সামর্থ্য নিতান্তই দুর্বল।
তানিয়ার মা ঘণ্টাবাঁধা কাজ করে লোকের বাড়ি।
তানিয়ার বাবা যখন রোগশোকে দেহান্তর হয় তখন তানিয়া নয়বছরের বালিকা। পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার পরে আর হয়নি স্কুল যাওয়া। মেয়েটির ভার নিয়েছে শ্যামলাল দুর্সম্পর্কের মামা। মামার বিয়ে হয়নি।বাবার বাউন্ডেলে ছেলে।বাবা গত হওয়ার পরে সংসারের হাল শ্যামলাল ধরেছে। একবোন বিয়ে হয়েগেছে।মা আছে।

তানিয়ার মা রাধারানী বিধবা হলেও যৌবনের শেষঘাট পার হয়নি।যেমন রূপ,তেমনি চেহারা।
একদিন শ্যামলাল বলল, দিদি তোর মানুষের বাড়িতে ঘণ্টাভিত্তিক কাজ করতে হবেনা। আমার সংসারে ভাতের অভাব নেই। বাবায় যে সম্পদ রেখে গেছে,তাতে বসে বসে খেতে পারব।
তুই এখন থেকে আমার বাড়িতে থাকবি।
বৃদ্ধ মা তাতে সায় দিল। তানিয়ার মা থাকলে আমিও কিছুটা বিশ্রাম পাব,মনে মনে ভাবল শ্যামলালের বৃদ্ধ মা।

শ্যামলাল বাউন্ডেলে হলে কি হবে,সে একদিন বলল দিদিকে,তোর মেয়ে তানিয়াকে স্কুলেভর্তি করে দে।
তানিয়ার মা রাধারানী দেখল,এই সংসারে আমি গতর খাটছি,দুটো ভাত খেতে পারছি। তানিয়াও পড়ার সুযোগ পেলো।
শ্যামলালের কথামত তানিয়াকে স্কুলে ভর্তি করে দিয়ে এলো।

নতুন স্কুলে ভর্তির সুবাদে তানিয়ার সাথে সুহানার পরিচয় ঘটল।ওরা প্রায় সমবয়সী।
তানিয়া আর সুহানা ওরা দুই বন্ধু।
দুজনের মধ্যে সম্পর্ক বেশ জমে ওঠল কয়েকদিনের মধ্যেই।

সুহানার পরিবার আর্থিক স্বচ্ছল ভালো। বাবার মুদি ব্যবসা। দুপয়সা ভালোই কামাই হয়।মা আছে,আছে ছোট একটি বোন তার নাম পিপাসা।

সৌভিক একটা অজপাড়াগাঁয়ের
ছেলে ।
বিদ্যেবুদ্ধি যা আছে তাতে রোজগার করে খেতে পারবে। চালাক চতুর খারাপ না।
বর্তমান চলনসই।
সৌভিক একদিন গ্রামছেড়ে গঞ্জেএলো।
কোথাও পেইনগেস্ট থাকা যায় কিনা,তার খোঁজ নিতে থাকল।
খুঁজতে খুঁজতে গঞ্জের বটতলায় মুদি দোকানের বেঞ্চিতে বসে ভর দুপুরের রোদগরম থেকে জিরোতে বসল দোকানের বেঞ্চিতে। কিছুক্ষণ জিরিয়ে দোকানদারকে জিজ্ঞেস করল, কাকাবাবু নমস্কার জানবেন। আমি সুদূর গ্রামথেকে এসেছি কাজের আশায়। যদি কোথায় পেইনগেস্ট পাওয়া যায় কিনা( মানে থাকাখাওয়ার বিনিময়ে যেকোন কাজ)

সুহানার বাবা ভাবল, আমার একটি লোকের দরকার।ছেলেটির কথাবার্তায় ভালোই মনে হয়।
— আচ্ছা তোমার নাম কি
–আজ্ঞে,সৌভিক পাল।
— তোমার আর কে কে আছে ?
— মা ব্যাতিত আর কেউ নেই।
— ঠিক আছে। আপাতত আমার বাড়িতেই থাকতে পার।কাজ এই দোকানে বসতে হবে। পারবেতো ?
— আজ্ঞে,পারব।
— তোমার কাজ দেখে মাইনের ব্যবস্থা হবে পরে।
–লেখাপড়া কতটুকু?
— জানি কিছু, তাতে নিজের কোন অসুবিধা হয়না।
— ঠিক আছে।
——
সুহানা স্কুলথেকে ফিরছিল তানিয়ার সাথে। তানিয়ার বাড়িও এই পথে…
দোকান থেকে বাবা হাক পেরে বলল, সুহানা এদিকে আয়।
একে বাড়িতে নিয়ে যা।
–কি নাম বললে ?
–আজ্ঞে,সৌভিক পাল
–ওহ, ঠিক আছে। ওকে নিয়ে যা।
সৌভিক চলল সুহানার সাথে।সঙ্গে তানিয়া।
ছেলেটির মার্জিত কথাবার্তা শুনে ওদের দুজনেরই ভালো লাগল।
সৌভিকের বয়স বছর তেইশ চব্বিশ হবে।
সুহানা আর তানিয়ার বয়স চৌদ্দ-পনের হবে।ওদের দুজনার শারীরিক গঠন প্রায় রকরকমই…
এই বয়সে টান টান যৌবন!দুজনেরই বুক ভরাট। নিতম্বে থল থল মাংস মোচড় খাচ্ছে ওদের হাঁটার তালে তালে। সৌভিক পিছনে পিছনে যেতে যেতে সেটা লক্ষ্য করল।
পুরুষের খাসিলতে কিছুটা দোষ থাকে।মাইয়া মানুষের বুক আর পাছার দিকে না তাকিয়ে পারেনা। সৌভিকের দশা একই অবস্থা।

কিছুদিন যেতে না যেতে সুহানা আর তানিয়া দুজনই ভালোবেসে ফেলে সৌভিককে।
সৌভিক এখন মূল্যবান বস্তু! ওরে পায় কে?
দুই নারীর প্রেমের সায়রে সৌভিক হাবুডুবু খাচ্ছে।
—-
ওদিকে রাধারাণীর দর্শন না পেলে ভাই শ্যামলালের ভাত হজম হয়না। মামাতো দিদি সম্পর্কে। রাধারাণীর জীবন আছে,স্বপ্ন আছে,মন আছে,আছে প্রেমকরার শখও।
এতদিন লজ্জা থাকলেও এখন আর লজ্জা নেই দুজনের মধ্যে।
একদিন লজ্জার মাথা চিবিয়ে খেল শ্যামলাল।
হঠাৎ অন্ধকারে দিদি রাধারাণীকে জড়িয়ে ধরে মুখে কিস খেল।
অকস্মাত শুকনো গাঙে হঠাৎই জোয়ারের একটা ধাক্কা খেল। লজ্জায় সেদিন রাধারাণী কিছু না বললেও মনের মধ্যে খচ খচ করতে লাগল। মনে মনে ভাবল, আবার যদি এমন ক্ষণ আসে,তা হলে মন্দ হয়না।
অন্তরে যেন ক্ষুধায় রুহু কাতরাতে থাকল ডাঙায় ওঠা কই মাছের মত।রাধারাণীর বুকের মধ্যে শ্যামলালের নিঃশ্বাস অনুভব করল।
রাতে ওরা প্রায়ই একসাথে ঘুমাতে যায়।
বাড়ির ওপর তলায় শ্যামলাল যেখানে থাকে,রাধারাণীকে শাড়ির আঁচল ধরে টেনে নিয়ে যায়।
প্রথম যেদিন শ্যামলাল তার সম্পদের ওজন রাধারাণীর নিতম্বে ঠেকাল সেইদিন বিদ্যুতের সার্কিট শর্ট রাধারাণীকে চুম্বুকের মত টেনে ধরল।
তারপর শ্যামলালকে বুকের মধ্যে টেনে নিয়ে স্তনের বোটা তার মুখের মধ্যে পুড়ে দিল। নে ভাই যত পারিস খা।
পরকীয়ার পরমেশ্বর বুক,পিঠ,কোমর,পয়োধর সবকিছুই যেন নিলামের ডাকে আপন খাঁচায় তুলে
নিল
—-
তানিয়া সুহানা আর সৌভিকের মধ্যে একটা ত্রিকোণ প্রেমের জালবোনা শুরু হয়েছে। তবে সুদ তুলছে সুহানাই বেশি।কারণ নায়ক যে ওদের বাড়িতেই থাকে,সেই সুবাদে লাভটা সুহানার বেশি।
তানিয়াও কম কিসে ?
সময়ে সময়ে তানিয়া সৌভিককে নিয়ে গঞ্জের টকিজ দেখতে যায়।আর সেখানেই সৌভিকের সাথে অন্তরঙ্গ হতে চায় তানিয়া।
প্রেমের রশি বড্ড নরম! টানতে গেলে ছিঁড়ে যায়। সুহানা একদিন সেই রশি টানতে গিয়ে বাবার চোখে ধরা পরল।
কালের কুহুরে সৌভিকের ভাগ্যে জুটল লাঞ্ছনা আর বিদেয় চিঠি।
সৌভিক বেরিয়ে এলো যে পাশ দিয়ে,অন্যপাশে সুহানা বিষের কৌটো খুলে নিজের মুখে ঢেলেদিল।
প্রেমের পর্যাপ্ত টানের মধ্যে দেয়াল তুলে দিল সুহানার বাবা।
আখেরে লাভ হলো তানিয়ার।
শেষে তানিয়া সৌভিককে নিয়ে গেল একটা ছোট্ট মন্দিরে।সেখানে ওরা ঠাকুর স্বাক্ষী রেখে শাখা-সিঁদুর পড়েনিল।
সেদিনই গঞ্জে কুৎসার ঢেউ ছড়িয়ে পড়ল,যে তানিয়া বিষ খেয়েছে,কারণ তার গর্ভে ভ্রূণের সঞ্চার হয়েছিল।
—-শব্দ সংখ্যা -800

মন্তব্য করুন