Skip to content

নির্বাচিত পাঁচটি কবিতা- মোহাম্মদ সিয়াম হোসেন

১. জীবনানন্দের নক্ষত্র

ব্যথা বুঝি প্রচণ্ড চাপে বুক থেকে কণ্ঠনালীর কাছে আসে?
মস্তিষ্কের সব ধৈর্য কেড়ে নিয়ে চোখের জল ঝড়ায়?
ব্যথা বুঝি পাথর চাপার মতো বুকে বিঁধে?
নিঃসঙ্গতার খুশবু ছড়ায়?
ব্যথা কী করে? কী না করে?
বেদনার আকাশ দেয় তারায় ভরে।
ভাগ্যিস তোমারা বোধ হয় কোনো কবিতা পড় না।
যদি পড়তে ব্যথাই জীবন সঙ্গী হতো।
ভাগ্যিস তোমরা প্রজ্ঞারে বোধ হয় বাসনি ভালো।
যদি বাসতে মস্তিষ্ক পোকায় খেতো।
এই সমাজের সব আহত কবিরা ব্যথার ভাগীদার;
যায়দাদ পেয়েছে উত্তরাধিকার সূত্রে।
বিশ্ব হয় না?
তবে দেখ কী পরিমাণ ব্যথা লেগে আছে
জীবনানন্দের নক্ষত্রে।

২. আমি যেমন ধার্মিক

আমি নিজের জন্য ধর্মের প্রতি কঠোর।
এতে যদি তুমি নিন্দা করো তবে করতে পারো।
যদি সম্পর্ক ছিন্ন করো তবে সে পথ খোলা,
যদি অবহেলা করো তবে তা তোমার ইচ্ছা।
আমি নিজেকে সঁপেছি প্রভুর নিকট।
তাই আপন ইচ্ছা গুলোকে দিয়েছি ছুটি।
বুদ্ধির কাছে দাস না হয়ে, উদার হয়েছি
আত্মার প্রতি, সংকীর্ণতার কাঁটা পথ হেঁটে
আল্লাহর প্রেমে বেঁধেছি জুটি।

৩. দূর থেকে ভালোবাসা সুন্দর

দূর থেকে আকাশের পাখি গুলো;
নক্ষত্র, চন্দ্র, সূর্য বা ফুলের ঘ্রাণ,
মরুভূমির বালু ও মরীচিকা;
পথে পড়ে থাকা অবহেলিত ধুলো।
জমিনে খোদার তরে দেওয়া সিজদা,
দূর আরশে যেমনি তোলে হুংকার।
তেমনি দূর থেকে ভালোবাসা সুন্দর;
কাছে এলে পরাজয় হয় তার।
দূর থেকে যেমনি সুন্দর প্রেয়সীর গলার হার।
কাছে এলে তা শুধু ধাতুর পাত;
সুন্দর দুর থেকে ভালোবাসা,
সুন্দর দুর থেকে বাড়িয়ে দেয়া প্রেয়সীর হাত।

৪. কবিতার যৌবন নাই

কবিতা দিয়ে যৌবন রাঙাতে গিয়ে দেখি।
আরে এ কী!
কবিতারই যৌবন নাই।
যৌবন খুয়েছে কবিতা কোনো প্রেমের চিঠির পাতায়।
ব্যর্থ আশিকের মত অবহেলায় অবহেলায়;
নিজের সব উত্তপ্ত দ্রোহ গুলো
উড়িয়ে দিয়েছে দিগন্তের মেলায়।
প্রেমে কাতর হয়ে কবিতা আজ বড্ড অকেজো।
অগ্নির শিখা দেখো?
ওগুলো ছিলো কবিতার।
আজ যৌবনহারা কবিতা হেরেছে দারুণ হার।
তাইত বলি, কবিতা পারলে একটু পুরনো সাজে সেজো।

৫. অস্তিত্বের সংকট

অস্তিত্বের সংকট আমাকে চিড়ে খেয়েছে একুশটি বছর।
সংখ্যায় দুই শূন্য হলেও; মহা শূন্যের মতো বিশাল এ সংকট।
আমার ঝলসে যাওয়া গলিত গোস্তের রং হয়েছে ধূসর।
অস্তিত্বের সংকট আমাকে চিড়ে খেয়েছে বরাবর;
একুশটি বছর।
হয়তো ক্ষুধার জ্বালা মেটেনি এতে তার।
হয়তো আমাকে চিরে খাবে বারবার।
বারবার গোটা জীবন হয়তো খেয়ে নিবে;
ইয়াজুজ-মাজুজের পাহাড় চাটার মতো।
সব শেষে পরে রবে ক্ষয় হওয়া শরীরে সংকটের ক্ষত।

মন্তব্য করুন