Skip to content

নিদ্রিতার মুখোমুখি — মুশফিক বরাত

১.
আমার কাছে একজন রূপবতী নারী মানে সোনালী বেন্দ্রে
আমার কাছে একজন লজ্জাবতী রমণী মানে রাধা-রাণী
আমার কাছে আকাশ মানে নীল।
নদী মানে খরস্রোতা-
চোখের জল এসে যাবে ব’লে লুকিয়ে ফেলেছ নিজেকে,
কখনো তীরে এসে খবর নিয়েছো
আমি কে?
আমি একজন সুপুরুষ।
নদী ভালোবাসোনি ব’লে এসেছো সমুদ্রের কাছে
নীল ভালোবাসোনি ব’লে জলপাই রঙের শাড়ি খুঁজছো?
একদিন চোখের জলে ডুকরে কেঁদে বলবে-
ভালোবাসি তোমায়!

২.
আমার আছে-
চিতাবাঘের মতো ক্ষীপ্রগতি
সেলফিশের মতো দানবীয়তা
আর বাজপাখির ন‍্যায় বায়বীয় দ্রুতময়তা
তোমার জন‍্যে ধূর্ত বাঘের সম্মুখ থেকে
ফিরে আসতে পারি।
ফিরে আসতে পারি ইভেন্ট হরাইজন থেকে,
এমনকি ভারত মহাসাগরের গভীর তলদেশ থেকেও।
আমাদের প্রেমের কাছে
মার্চিসন উল্কার আদিমতা পরাজয় বরণ করবে
ডেকে আনবে মধ‍্যযুগীয় বর্বরতা
যেখানে ছিল নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা
অবাধ আচরণ।
ধেয়ে আসবে প্রিয় শহর সমান উল্কাপিণ্ড;
রুখে দেবে হিমালয় পর্বত।

সেদিন প্রথম খবরে দেখলাম
একজন কৃষক একটা শুধুমাত্র একটা ধানগাছের জন‍্য
গভীর জলে ডুব দিয়েছিল।
আমিও কি?
পারবেন কি আমার পিতৃতুল্য পিতাও।

নবীদের রক্তাক্ত শরীর আর
মার্কসের ধূসর স্থবির দেহ
আমাকে ব‍্যথিত করে;
কমরেড লেনিনের অসম্ভব ক্ষীপ্রতা ও নিরাপদ পথচলা
আমাকে মুগ্ধ করে।
জনতার কাছে বারবার ছুটে যেতে উদ্বেলিত করে।

জানো নিদ্রিতা-
হরতালে শুধু একটা জিনিসই খুলতে দেখা যায়
সেটা এটিএম বুথ।তার মধ‍্যে একটি
তোমার-আমারও হতে পারতো।
যেমন হতে পারতো জান্নাতুল বাকির একটি সাজানো ফুলের উদ‍্যান
অবাধ বিচরণের
যেখানে সহসাই জলকেলী খেলেছে বেহেশতি হুরেরা;
পুষ্পমাখা হলদে রঙ মেখে।

৩.
মহাজাগতিক রশ্মি ছুঁয়ে দেবে তোমার শরীর
নামব দু’জনে কোনো এক নতুন সমাজে
নভোযান বদলের ভূমিকায়।
মহাবিশ্ব সৃষ্টির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত
যতবার নিজ অক্ষে পৃথিবীর আবর্তন ঘটেছে
ঠিক ততবারই স্পর্শ ঘটবে আমাদের।
নীলনদে ডুব দেইনি যদিও
আটলান্টিক মহাসাগরের পরশ পাইনি
কিন্তু ছুঁয়ে দেখেছি যমুনার জল।

ছুঁয়ে দেখেছি আম্রকাননে মৌমাছির গুঞ্জরণ
দেখেছি ছুঁয়ে বিখ‍্যাত শহরের পরিচিত লেক
তোমার আগমন বার্তা শুনে।
সূর্যদীঘলবাড়ির কাছাকাছি পৌঁছে যাব কোনো একদিন
যেখানে ঘটবে গগনবিদারী ভালোবাসার দুর্ভিক্ষ
কোথাও ঠাঁই না পেয়ে অবশেষে আমাদের অবস্থান
ঘটবে ঐ সূর্যদীঘলবাড়িতেই।
অষ্টপ্রেমপ্রহরে বাধা দেবে না সুমিষ্ট
কোনো দোয়েল পাখির মূর্ছনা;
কিংবা কুসুমতরঙ্গে ভেসে আসবে আবহসংগীতের ধ্বনি।
ষড়যন্ত্র চলছে আমাদের চিরকালীন
প্রেমকে দাবিয়ে দেবার-
ষড়যন্ত্র চলছে নব‍্য ধনীর ক্ষণিক মাথা
তুলে দাঁড়াবার সময়টুকুতে
ষড়যন্ত্র চলছে লাল শ্লোগান মুছে ফেলবার।

জানো কি নিদ্রিতাঃ
নেট দুনিয়ায় কত কি ভাইরাল হয়!
সেদিন দেখলাম একটা চিংড়ি মাছ
শেষপর্যন্ত ভাইরাল হলো।

সৌন্দর্যে-জ্ঞানে-গুণে অনন‍্য প্রতিটি দেশ
তাদের পাহাড়ি ঢল।
লাস‍্যময়ী নারীরও কমতি নেই কোনো দেশেই
তারপরও বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায়
হেরে যায় কোনো দেশ চিরতরে,
খেলার মাঠেও যোগ‍্য প্রাপ্তি ঘটে তাদের।
হারিয়ে যাচ্ছো কোলাহল ছেড়ে
হারিয়ে যাচ্ছো দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ছেড়ে,
শ‍্যামল চা-বাগান ফেলে ও সুগঠিত দ্বীপের
আহ্বান নাকচ ক’রে দিয়ে।

দু’জনে এত কাছাকাছি তবু
নজরে আসেনি কারুরই-
তবুও রেডিও সিগন‍্যাল পাঠায়নি
কোনো এলিয়েন কিংবা মহাকাশ বার্তা;
আমাদের মিলন তিথি বা স্পর্শের
গন্ধ পেয়ে।
আমাদের প্রেমের স্বঘোষিত ঘোষণায়।

মন্তব্য করুন