Skip to content

তোমার ঠোঁটে সিগারেট মানায় না – শুভদীপ চক্রবর্তী

তোমার ঠোঁটে সিগারেট মানায় না
ঢেউখেলানো রাঙা তোমার ঠৌঁট,
আর ঈষৎ লজ্জার প্রলেপ……
আমার প্রাণে নেশা ধরায়!
যখন দেখি কোনো আগ্রাসী সিগারেট
তোমার ঐ দুটি ঠোঁট স্পর্শ করে
এবং তুমিও পরম সুখে তাকে চুম্বন করো
ভীষণ কষ্ট হয়….
দুমড়ে মুচড়ে যায় হৃৎপিণ্ড!
উদ্ধত সিগারেটের তীব্র আস্ফালন
আমায় বিদ্ধ করে।
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধুম্রকুন্ডলী পাকিয়ে উঠতে থাকে!
ওরা আমায় ছোবল দিতে চায়
সহস্র নাগিনীর মতো!
আমি আচ্ছন্ন হয়ে যাই……
তোমার নিরীহ ঠোঁট,
নিরীহ অন্তর তোমার….
সিগারেটের মতোই কি জ্বলতে থাকে?
পুড়ে যায় বুঝি একরাশ বিষন্নতায়!

তোমার ঠোঁট তো কবির প্রেরণা
ঐ ঠোঁটেই যে সিক্ত হতে চায়
আমার কবিতা!
তোমার ঐ নিষ্পাপ ঠোঁট দুটিতে
একটুও মানায় না সিগারেট!
আমায় যদি ভালবাসো
তবে সিগারেট ছোঁও কেন?
সিগারেট বুঝি আমার চেয়েও বেশি প্রিয়!
তোমার শুভ্র, স্নিগ্ধ হাসি
আজ কর্পূরের মতো উবে গিয়েছে
সেই কবে তুমি চুমু খেয়েছিলে
আমার শুকনো ঠোঁটে!
এখন তোমার মুখে শুধু….
সিগারেটের তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধ পাই।
দামী ব্র্যান্ডের লিপস্টিকে রাঙানো ঠোঁট
ভালোবাসে নির্লজ্জ সিগারেটকে!

হঠাৎ যেন এই চিন্তায় তাল কাটে….
ভেসে আসে একটা কান্নার শব্দ
স্পষ্ট অথচ ক্ষীণ
চাপা এবং করুণ!
হোঁচট খায় কবির কলম
কে কাঁদে?
নারী তুমি?
নাকি অন্য কেউ!
প্রশ্ন করে কবির কলম
উৎকন্ঠায় প্লাবিত হয়
কবিতার চোখ!

হে নারী,
তুমি কি জানো
তোমার শরীরে আজ নিকোটিনের সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছে!
একটা ছোট্ট ভ্রূণ একটু একটু করে বড় হচ্ছে তোমার গর্ভে…
শুনতে পাচ্ছো কি তার কথা?
ও কিছু বলতে চাইছে
কান পেতে শোনো একটিবার….
খুব কষ্ট হচ্ছে ওর
দমবন্ধ হয়ে আসছে!
শুনতে পেয়েছো ওর কথা?
ওর কান্না তোমার মাতৃহৃদয়ে
এখনো বুঝি পৌঁছায়নি ?
ঐ শোনো ওর আকুতি…..
ওর মাথা ঝিমঝিম করছে।
হাত, পা গুলো কেমন যেন বেঁকে যাচ্ছে।
দোহাই তোমার।

হে নারী,
এসব শুনে হয়তো তখন
তোমার ঠোঁট থেকে
খসে পড়বে সিগারেটটা!
তীব্র গরমেও অনুভব করবে
একটা হিমতীক্ষ্ণ পরশ
শিউরে উঠবে তুমি!
তোমার সন্তান হয়তো তখন কাঁদছে
আর বলছে…..
-মা, আমায় তুমি জন্ম দিও না।
আমি বিকলাঙ্গ হয়ে বাঁচতে চাই না।
………….

মন্তব্য করুন