Skip to content

জিরো পয়েন্ট – যুবক অনার্য

জিরো পয়েন্ট
যুবক অনার্য

ঘুম হেকে উঠে একজন কবিকে প্রাতঃ কৃত্য
সেরে নিতে হয়। ব্রাশ করে গামছা দিয়ে
মুছে নিতে হয় মুখমন্ডল।নাস্তার টেবিলে বসে কবিও ভালমন্দ আহারের তৃষ্ণা বোধ করেন।অফিসে গিয়ে বউকে প্রায়শ অকারণেই ফোন দিয়ে বলতে হয়- খেয়েছো সোনা? বেশি করে
জল খেয়ে নিও সুগারটাও একটু মেপে নিও রাতুলকে টিচারের কাছে দিয়ে এসো
যদিও এতে তোমার কষ্ট হয়ে যায় খুব
কিন্তু কী আর করবে বলো দিনকাল তো
ভালো নয়।ওদিকে সুযোগ পেয়ে কবির বধুও ফেদা পেঁচাল শুরু করে দেন – জানো, আজ কি হয়েছে সাত সকালেই হারুদা এসে হাজির। হারুদার এব্বড়ো গোঁফ, তোমাকেও ছাড়িয়ে গেছে…. কবি এসব খুব মনোযোগ দিয়ে শুনবার অভিনয় করে যান।তো, এই হল সংসারধর্ম পালনকারী একজন কবির যাপিত দিনানিপাত।যারা ভেবেই নিয়েছেন যে, কবি ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করেন না মাস এর পর মাস স্নান থেকে
বিরত থাকেন মাথায় চাম উকুন চাকুরি বাকুরি করেন না বউয়ের প্রতি উদাসিন
ছেলের ইশকুলের মায়না দিতে ব্যর্থ হন যথারীতি –
তাদের এসকল ধারণাগুলির অধিকাংশই
মিলবে না কারণ এরকম উলোটপালট জীবন
বেছে নিলে কবিতাও পাছার কাপড় তুলে
দৌড় দিবে এবং এও সত্য যে এরকম এখন যন্ত্রণাদগ্ধ জীবন নেই বোলেই আজকাল কবিতাও নেই।আজকাল আবুল হাসান নেই,
রুদ্র শহীদুল্লাহও নেই।যারা আছন তারা আসলে কবি চরিত্রে অভিনয় করে যাচ্ছেন
তবে সেই অভিনয়ও খুব কাঁচা এমনকি
দাঁত ব্রাশ না করলেও স্নান না করলেও
মাথায় জটাজাল আর চাম উকুন থাকলেও
কবিতা ধরা দিচ্ছে না। এর কারণ কি!কারণ হলো আজকাল কবিগণ কবিতা থেকে অনেক কিছু প্রাপ্তির আশা করেন কিন্তু কবিতা ধরা দেবে তখন, যখন একজন লেখক কবিতা থেকে কেবল কবিতাই আশা করবেন,অন্যকিছু নয়।ধরা দেবে তখন,যখন জিরো পয়েন্টে দাঁড়িয়ে একজন কবিযশোপ্রার্থী চিৎকার করে বোলবেন – যারা যারা স্বাধীনতার বুলি আউড়িয়ে মুখে ফেনা তুলে হাতিয়ে নিচ্ছেন সমস্ত রাষ্ট্রীয় সুযোগ, তারা আসলে রাজাকার – এসকল রাজাকারের স্বাধীনতা আমরা মানি না। এবং বোলবার পর প্রস্তুত থাকতে হবে একটি তাজা রাষ্ট্রীয় বুলেটের অপেক্ষায় যা তাকে মুহুর্তেই ঝাঁঝরা করে দিবে – ঠিক নূর হোসেনের জিরো পয়েন্টে যেখানে নূর হোসেনের জন্যেও প্রস্তুত ছিলো জলপাই এলাকার কয়েক রাউন্ড রাষ্ট্রীয় বুলেট আর উদ্ধত বেয়নেট,সেই নূর হোসেন যার বুকের মধ্যে
রচিত হয়ে গেছিলো একটি কবিতা
যার নাম – গণতন্ত্র!

মন্তব্য করুন