প্রগাঢ় ঘুম চাই আমার
উচ্চাঙ্গ রতি মন্থন শেষের,
নাড়ী মন্থর ক্লান্ত আবেশ মাখানো পেলব ঘুম।
ঘুম চাই।।
চোখের পাতা নেমে এলেই,
হুইসেল বাজিয়ে ছুটে আসে আদিম লোকাল ট্রেন,
মরচে ধরা গাঢ় নীল দরজায়-
সারে সারে ঝুলতে থাকা দেহাতি মানুষ।
গাদাগাদি ভীড়, গামছা গলায় হকার হেঁকে যায়- ঝালমুড়ি…, এই ঝালমুড়ি…
ডাক গাড়ির দরজা বন্ধ, জানালার শিকে বাধা সাইকেল আর কলার ছড়ি।
আমার অবচেতন জুড়ে চটচটে ঘাম,
ছেড়া ঠোঙা, বিড়ির কটু গন্ধ, নোংরা পায়খানা, ভাঙা আসন, কলার খোসা, কয়েকটা চিনেবাদাম।
সারিবদ্ধ অন্ধ ভিখিরি টেনে টেনে সুর তোলে
‘ আমার আল্লা নবিজীর নাম’।
সুবহে সাদিক পেড়িয়ে গেছে,
সিগনালে সবুজ বাতি, লাইন ক্লিয়ার
সাদা উর্দি পরা রেলগার্ডের বাঁশিতে ফুৎকার…।
পড়ে থাকে আমার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘর
আর প্রগাঢ় নীল রুমিয়ন।
আমি দৌড়াতে শুরু করি,
ঘটাং ঘটাং… ভোঁ ভোঁ…ঘটাং ঘটাং
প্লাটফরম ছেড়ে যাবার ঠিক আগমুহুর্তে
হাঁচড়ে পাঁচড়ে আমি ওঠে পরি এক কামরায়।
বৃদ্ধ কবিরাজ, কাঁধে সাদা ময়লা ঝোলা,
বের করে গোপন পাথর,
শুনি করতাল আর খঞ্জনির ঝংকার,
তেলমাখা চকচকে একমাথা লম্বা চুল
ইষৎ নাড়িয়ে, দোতারা টেনে গান ধরে বাউল,
শেষ ট্রেনে ফিরে এলে ওর গান মরে যায়,
খোলা খালি কামরায়, হাওয়ায়…
ওই দোতারাটা একলা কেদেঁ যায়।
আর আমি সেই কান্নায় ফুঁপিয়ে ওঠে
আরো একটা সকাল দেখি।।