Skip to content

ক্ষিরের সন্দেশ- মানুষ আজিজ

বিমলার আজ একা থাকার দিন। পত্রিকার বিনোদন পাতাটাও বেশিক্ষন চোখের সামনে ধরে রাখতে পারলো না। শহরতলীর সাধারন জীবন কেটে যাওয়া সাংসার বিমলার। বর শহরতলীর bank এর অফিসার পদে আছে। বর অফিসে যাওয়ার পর রান্না বান্না করে বাকি সময়টা বেকার কেটে যায়। গানশুলা ,সিনেমা ,শরদিন্দুর গল্পতে বেশিক্ষন মনে ধরে রাখতে পারে না। বিমলার আজকাল পুরনো দিনের কথাই মনে পড়ছে; বৌচি খেলার মাঠ, সাহেব বাড়ির বড় পুকুর বা নিলমনীদের সুপারিবন। নীলমনীর বড়দা অনল প্রবাহ ধারুন গান বাঁধতে পারতো, কি চমৎকার মুখখানা ছিল তার ; কত সুন্দর করে কথা বলতো ! কথাতে যেন মধু লেগেই থাকতো , অনেকটা কবিতার মত শুনাতো তার কথাগুলো । নীলমনীর দিদা কি সব ক্ষিরের সন্দেশ, আচার,মুড়ির সন্দেশ বানাতো এত স্বাদের ছিল। অনলদা বুয়েটে চান্স পেলে পাড়াগা থেকে চলে গেল, কখনো ছুটিতে এলে অনলদা শহরের বন্ধুদের গল্প করতো। একদিন কলেজ থেকে ফিরে খেয়ে কিছু ঘুমুচ্ছিলাম , মা এসে বললো এই বিমলা শুনছিস অনলকে কারা নাকি মেরে ফেলচ্ছে ! ঢাকা থেকে ওর বন্ধুরা জানিয়েছে । ঐ দিনের কথা বিমলার মনে পড়লে গা শিউড়ে উঠে; এরপর ঢাকা থেকে লাশ আনা হলো , এত সুন্দর মানুষটাকে কি পৈশাচিক ভাবে হততা করছে ; চোখ ,মুখ, কিছু অক্ষত নেই যেন। বিমলা অনেক রাত ঘুমুতে পারেনি ঐ মৃতুতে ; কখনো বলাও হয়নি বিমলা অনলকে কত ভালোবাসে। অনলের মৃতুর কারন জানা যায়নি, কিছুদিন বুয়েটে মিছিল , তদন্ত কমিটি ও একটি মামলা। অনলের বাবা ঢাকায় দৌড়া দৌড়ি করে অসুস্থ হয়ে গেছে ; এ দেশে তো নিজের জীবনের দায়িত্ব নিজেকে নিতে হয় ! কোন মামলার তদারকী না করলে তো মামলা হারিয়ে যায়। বিমলার এসবই মনে পড়ছে! কেনই বেঁচে আছে বিমলা? মানুষ হারায় কেন? অনলের মৃতুর পর ওর দিদা আর ক্ষিরের সন্দেশ বানায় না । ঐ মৃতুর দিন নীলমনীর দিদা কান্না করে বলছে আমার সোনা দাদু কই গেলা? ক্ষিরের সন্দেশ কার jonno বানামু! আহ! কি সুন্দর চরিত্রের মানুষের কি মৃতু।

মন্তব্য করুন