Skip to content

কবিতা : হে শিকারী। কবি : অরণ্য মজিদ।

কবিতা : হে শিকারী।
কবি : অরণ্য মজিদ।
তারিখ : ১৭ নভেম্বর ২০২১।

হে শিকারী
শিকারী কুকুরের মতো আমার পোশাক আর শরীরের ঘ্রাণ
শুঁকতে শুঁকতে
শেষ পর্যন্ত আবিষ্কার করেছ
এই নির্বাসিত জঙ্গল।
আমিতো কেবল শুকনো পাতার আস্তরণের নীচে
বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছি
আমারই বেঁচে থাকা।
তবুও আমাকে পিষে মারতে
বুকের উপর রেখেছো
অপ্রতিরোধ্য টায়ার পা, বিষাক্ত গ্রেনেড।
আমিতো ধর্ষিতা নারীর শাড়ির মতো
ছুঁড়ে ফেলেছি আমার
আলোড়িত রক্তে অঙ্কুরিত পতাকা।
পৈত্রিক ভিটার মতো
প্রিয় স্বাধীনতা।
আমিতো ফেলে এসেছি
এক লক্ষ পঞ্চান্ন হাজার ছাব্বিশ বর্গ মাইল
শ্রাবণের মাঠ, শীলা বৃষ্টির উঠোন,
ইলিশের জাল , কুয়াশা জড়ানো পানকৌড়ির পাখা
বিষন্ন নারীর চোখের মতো
শীতের সন্ধ্যা।
বাতাসে ওড়া নারীর স্বহাস্য ওড়নার মতো
সারি সারি শিরিশের পাতা।
আমিতো এসেছি ফেলে
প্রিয়তমার সম্মোহনী লাল দুটি চোখ।
যেখানে দাঁড়ালেই বাতাসে নুইয়ে পড়া ঝাউ বনের মতো
অবনত হয়
আমার অবয়ব।
এতো জলাঞ্জলি, এতো বিসর্জন
সবই তো রেখেছি তোমার
তরবারির কোষে
তবুও এখন কী চাও তুমি।
আমার এ বস্ত্রহীন দেহ
ছিঁড়ে ছুঁড়ে চামড়াহীন করতে চাও হৃদপিণ্ড আমার?
বুকের সানকিতে মুখ রেখে
কুকুরের মতো পান করতে চাও
গরম রক্ত?
কিন্তু কী অপরাধ আমার?
জিহ্বা ও দাঁতে বাজিয়েছি গনতন্ত্রের আওয়াজ।
মুজিবের মতো আঙ্গুলের নীচে
জড় করতে চেয়েছি বিপন্ন মানুষ
ইতিহাসের পাতায় দাঁড় করাতে চেয়েছি
কাকের ঠোঁটের মতো সাহসী কলম
এতো আমার জন্মগত অধিকার।
অধিকার যদি বিপ্লব হয়
বিপ্লব যদি রাষ্ট্রদ্রোহ হয়
তবে কোনটা আমাদের সঠিক আকার
” মানুষ থেকে হতে হবে চতুষ্পদ? ”
তবে খাও, আমাকে যত পারো খাও।
হায়েনার দাঁতে, বাঘের নখে
কেশর দুলানো সিংহের মতো লাল চোখে
চেটেপুটে, উল্টেপাল্টে যত পারো খাও।
তবে মনে রেখো
একদিন ইতিহাসের পাতায়
স্বেচ্ছায় দাঁড়াবে
মহাকালের বিষাক্ত দাঁত।
তোমাকেও টেনে হিঁচড়ে খাবে
তোমার বুকের ভেতর থেকে
টেনে বের করবে
আমাদের অবরুদ্ধ দেহ।
ইতিহাস রক্ষা করেনা কাউকে
শুধু এইটুকু মনে রেখো।।

মন্তব্য করুন