Skip to content

কবিতা : আমার কোনো প্রাপ্তি নেই – অরণ্য মজিদ

আমার কোনো প্রাপ্তি নেই!
অনন্ত বছর ধরে এই মাটি
আমাকে বসত দেবার ভয়ে
বহুবার লিখেছে আমার নাম
মৃতদের সাথে!
আমার স্পর্শ নেবার ভয়ে
ঐ দূরত্বের আকাশ
সরে গেছে আরো দূরে
প্রতারণার নীল শহরে।
আমি ছুঁতে পারিনি কোনোদিন
এই সুন্দর পৃথিবীর
সুন্দর চিবুক।
কেবলই ব্যর্থ প্রয়াস ফিরেছে
আমার ব্যর্থ হাতে।
যেন আদিকালের
বস্ত্রহীন মানুষ আমি
ছুঁটেছি বর্ষা বল্লম হাতে
অরণ্য থেকে নদী জলে
আমার নগ্ন কঙ্কালে
মাংসের আবরণ দিতে।
প্রতিদিন প্রতিবার
কদর্য আর কদর্য নিয়ে
জলহারা নদী
বালু মুখে
নতজানু কেঁদেছে আমার
পিপাসার পিঠে।
ঘাসের ডগার উপর
ঘুমানো হরিণ
আসেনি কাছে আমার ডাকে
বাঘের হৃদপিণ্ডের ভেতর ঘুমিয়েছে সে মহাসুখে।
আমার প্রিয় পাখির কন্ঠের সুর
উড়ে গেছে বাঁজের
পাখার সাথে।
আমার ঘামে ভরা শরীর নিয়ে
অরণ্যের ছায়া দিয়েছিল পাড়ি
মরুভূমির বুকে।
আমার কোনো প্রাপ্তি নেই
ছিলোনা কোনোদিন।
আমার কাঠুরে হাত
বৃক্ষে বৃক্ষে দেখেছিল
সাপের চলন
পাথরে পাথরে আগুনের ফলন।
কোনো এক রমনীর চোখের জলের নিচে
দেখেছিল
কুমিরের আত্মগোপন।
বন্ধুর বুকের খই ফোঁটা ভালোবাসা নিতে
আমার যে হাত এসেছিলো
সে হাত ফিরে গেছে
আগুন পিঠে।
দেখেছিল,
তোমার ঐশ্বর্যময় শরীর
মহা দূরভিক্ষের ঝাঁপি নিয়ে
পেতেছিল হাত
আমারই ক্ষুধিত বুকে।
আমার কোনো প্রাপ্তি নেই
ছিলোনা কোনোদিন।
আমার আদিকালের সেই দৌড়
এখনো পাইনি খুঁজে
প্রাপ্তির সীমানা প্রাচীর।
দিগন্তের মুখে ঝুলন্ত শূন্যতা
এখনো দোল খায়
আমার শূন্য চোখে।
প্রাপ্তিহীন শূন্যতা শুধু
বেঁচে থাকে মহাসুখে
আমারই বুকে।

মন্তব্য করুন