তুমি এক এলায়িত আলো,
আমি নিবিড়তম অন্ধকার।
তোমার অনুপস্থিতি
আমায় সম্পূর্ণ করে।
একটা অশ্বত্থ যেভাবে নির্জনতাকে পূর্ণাঙ্গ করে,
কিশোরীকে হাতছানি দিয়ে যেভাবে ডাকে
রক্তিম প্রান্তর।
উপত্যকায় যেমন করে হঠাৎ সন্ধ্যে নামলে
চিমনি দিয়ে ধূসর সাদা ধোঁয়াটে করে তোলে
পাহাড়ের খাঁজ।
আমার পাথুরে শীতল ডুবে
একটা পাথরে রেখে আসা রক্তের দাগের মতন
তোমার স্মৃতিকে ফেলে রেখে এসে
অন্যদেশে।
তুমিও তবুও আমাকে চাওনি,
পাথরের মতন স্থির কেমন একটা নিঃশূন্য পৃথিবীর বুক থেকে উঠে আসা শিলায়িত অন্ধকার আমার চোখে।
তুমি তাও আমাকে ধ্বংস করো কোন একটা আচমকা সংরাগে।
তুমি জানোনি এসব কথা, এসব ঘাটের কথা, আড়ালের কথা, বুনো ফুলের কথা।
একটা সেগুনপাতা কীভাবে মাটির পরতে মিলিয়ে যায় চুপিসারে, শুধু থাকে তার শীর্ণ মিহি হাড়-পাঁজর, আর জুতোর দাগ।
তুমি সাময়িক মেঘের আভা দেখেছ সবিষ্ময়ে, তবুও তুমি জানো না কোথায় আছে তোমার জন্মদাগ,
তুমি জানো না কেন দুহাত ভরে থাকে ক্ষত, তারাও তোমারই মত, সময়ের চাবি।
একেকটা ক্ষতও তো ঘর, চোখ পড়তে ফেরায় যাপিত সময়ে।
তুমি জানো নি একটা বুনো আমগাছের কথা, তার বাসিন্দা পোকার কথা, কীভাবে তারা অন্ধকারে মাথার চারপাশ ছেঁকে ধরে।
তুমি এক শীতল ধূসর হীম উৎসবে একটা স্থবির ছবির মতন দাঁড়িয়ে ছিলে, দেবদারুর চুল মেলে।
সেখানে একটা দরজা ছিল, কোন ঘর ছিল না, দেয়াল ছিল না।
তবু তোমার সাজানো সমাজের আড়ালে, একটা না হওয়া ঘরের লোভে একটা কাক ও একটা অশ্বত্থ গাছ আজও হাঁতড়ে ফেরে দেয়াল।