Skip to content

এভাবেই… -প্রমিতি প্রমা

শহরের কোণায় একটি নদীর পাড়, বাধানো ঘাট, অনেক গুলো রেস্তোরাঁ, জাকজমক হাটার পথ আর প্রচুর মানুষজনের স্রোত। ঘাটের নৌকা গুলো ব্যাস্ত, মানুষ গুলোও ব্যাস্ত। ঘাটের সিড়ি দিয়ে নেমে সোজা হেটে নৌকাগুলো পার করে; অনেক খানিক দূরে ঘাটের একটা জায়গায় অনায়াসেই বসে পড়া যায়। জায়গাটা ঢালু ঠেস দিয়ে বসতে হয় পিছলে পরলে সরাসরি পানিতে পরতে হবে। বাম দিকে যতদুর চোখ যায় জনশুন্য, ডানে অনেক দূরে ঝাপসা ভাবে ঘাটটা দেখা যায়, মাথার উপরে সেই জাকজমক হাটার পথ আর লোকজন। সামনে নদী, বড় আকাশ আর হটাৎ দুই একটা নৌকা চলে যায়; ঘাটে পানির স্রোত এসে ধাক্কা খায়। নাকে নিকোটিন পোড়া গন্ধ, এক কানে গান; অন্যকানে মানুষের কোলাহল, বা দুকানেই গান আবার দুকানেই মানুষের কোলাহল। পিছন থেকে একটা হালকা আলো পাড়টাকে অল্প দৃশ্যমান করে তুলেছে, সেই ঝাপসা আলোতে নিকোটিন পোড়া ধোয়াকে কেমন রহস্যময় লাগে।
নদীর অপারে আলোগুলো হঠাৎ হঠাৎ চোখে লাগে, চোখ থেকে মাথায় কেমন একটা ধাক্কা দেয়। এই আলোটুকু না থাকলে সম্পুর্ণ পাড়টা অন্ধকারে মিশে যেত। রাতের অন্ধকার নদীকে আরো কালো করে দিয়েছে। আমার শহরের মানুষেরা কেমন তা দিনেবেলা এই নদীর রঙ দেখলেই বোঝা যায়।
তাই হয়তো দিনের তুলনায় রাতের অন্ধকারের এই পরিবেশটা সুন্দর। কেমন অদ্ভুত সুন্দর! এখানে একাকিত্বকে এত সুন্দর ভাবে অনুভব করা যায়! সহজভাবে বললে নিজেকে এত গভীর ভাবে অনুভব করা যায়! আমার খুব মায়া হয় এই সমস্তটার প্রতি। আমার খুব মায়া হয় এই শহরের মানুষ গুলোর প্রতি। সমস্ত নেতিবাচক অনুভুতি আমি এই নদীতে ফেলে যাই প্রত্যেক বার…..
এই অভ্যাসটায় আমার ফাটল ধরা, ভাঙতে আমি দিবো না। মাথার উপর বিরাট দায়িত্বের পাহাড়। সময়ের বড্ড অভাব।

মন্তব্য করুন