Skip to content

একটুখানি সহানুভূতি – বোরহানুল ইসলাম লিটন

কয়েকদিন আগের কথাঃ
গ্রামের মেঠো পথে বয়স্ক এক চাচীর দেখে পেয়ে জিজ্ঞেস করলাম –
’কেমন আছেন চাচী মা?’
সাদাসিধে মুখখানি তুলে দরদ ভরা কণ্ঠে ‘ভালো আছি বাবা!’
শুধু এ’টুকু বলতেই তার চোখ দু’টি ছলছল করে উঠলো।
দেখে কেন জানি আর ধাপ তুলতে পারলাম না,
অজানা এক দায়িত্ববোধ চেপে ধরলো তৎক্ষণাৎ।
বাধ্য হয়ে গল্প করতে লাগলাম দাঁড়িয়েই।

বেশ কয়েক বছর আগে মারা গেছেন চাচাজান।
অভাব অনটনহীন স্বচ্ছল সংসার,
ছেলে মেয়ে আছে,
খুব ভালোবাসলেও তারা
কাজের ফেরে যথেষ্ট সময় দিতে পারে না মা’কে।
বুঝলাম এ’ কষ্টের জল
তবে অন্ন বস্ত্র বা বাসস্থানের নয়,
একটুখানি সহানুভূতিশীল কথনের।

একটা নির্দিষ্ট কাল অতিক্রম করার পর
মানুষের বয়স যতোই বাড়তে থাকে
আচার-আচরণে ততোই বৃদ্ধি পায় শিশু মনের বৈচিত্রতা।
অর্থাৎ মানুষ শিশু অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে
আবার ঠিক শিশু হয়েই ঢলে পড়ে মৃত্যুর কোলে।
আপনজনদের সহচার্য বিনে শিশুরা অসহায়,
বয়স্ক মানুষগুলোও তেমনি।
অথচ আমরা ইচ্ছে করলে এই অসহায়ত্ব থেকে
অনেকটাই তাদের মুক্ত করতে পারি, খুব সহজেই।

ঘর-বাহিরে চলার পথে পরিচিত বয়স্ক মানুষ পেয়ে
সমাচার জিজ্ঞেস করার ছলে দু’টো সহানুভূতিমূলক কথা বললে
সত্যিই কি খুব বেশী মূল্যবান সময় নষ্ট হয় কারো?
একবার যদি ভাবি নিশ্চয় আমাকেও একদিন হতে হবে
এহেন অবস্থার সম্মুখীন
তাহলে কিন্তু স্বয়ংক্রিয়ভাবেই দায়িত্ববোধ চেপে ধরবে অজান্তে।
নিজের সুখটুকুই বড় কথা নয়, অন্যের সুখে সুখী হয়ে দেখুন
আমি বলছি জীবন সম্পর্কে ধারণাই পাল্টে যাবে আপনার
যদি প্রকৃত মনুষ্যবোধ কিঞ্চিতও জেগে থাকে পিঞ্জরে।

একটুখানি সহানুভূতি
#বোরহানুল ইসলাম লিটন
১২/০৫/২০২৩ইং।

মন্তব্য করুন