Skip to content

একটি সুখী শালিকের গল্প

কোন এক পাহাড়ে, ভোরের অন্ধকারে, বসে ছিলো এক সুখী শালিক। বাবুইপাখিদের মত তার হয়তো সুন্দর বাসা নেই, কোকিলের মত হয়তো সুন্দর কন্ঠ নেই তারপরও সে সুখী। তাই পাহাড়ের অন্য সব পাখি আর প্রজাপতিরা তাকে চেনে সুখী শালিক নামে। এই পাহাড়ের ছোট ছোট সুরঙ্গের প্রত্যেকটাই তার ঘর, যেখানে ইচ্ছে ঘুমিয়ে পড়ে সে, জুম ঘর থেকে ভেসে আসা অচেনা বাশির সুর তার কাছে প্রিয় গান। এই পাহাড়ের প্রত্যেকের দু:খ সে ভাগ করে নেয়। একটা সময় সেখানে উড়ে এসে বসে পড়ল অচেনা এক দু:খী শালিক। পাশেই বসে ছিল সুখী শালিক। সে জিজ্ঞেস করে –
– “মন খারাপ? তোমার কিছু দু:খ আমায় ধার দিতে পারো”
সুখি শালিকের প্রশ্নে বিরক্ত দু:খী শালিক বলে
– “আমার দু:খ আমরই! কাউকে ধার দেয়া যায় না!”
বলেই দু:খী শালিক উড়াল দিলো আকাশে। উড়তে উড়তে তার মনে হলো, “সুখের ভাগ হয়তো দিতে পারবে না সুখী শালিক, কিন্তু ভালো একটা সময়ের ভাগ তো সে দিতে পারে, ভালো বন্ধু সে”। মুহুর্তেই দিক বদলে দু:খী শালিক উড়াল দিলো সুখি শালিকের দিকে। পাহাড়ের সেই জায়গাটায় পৌছে দু:খি শালিক দেখল, সুখী শালিক সেখানে নেই। মন খারাপ করে সেখানেই বসে পরে দু:খী শালিক। হঠাৎ সামনের দিকে চোখ ভরে দেখে দু:খী শালিক, সে দ্যাখে পাহাড়ের পর পাহাড়, জুম ঘর, সে ঘরকে ঘিরে হলুদ গাদা ফুলের বাগান! সুখী শালিক তাকে দিয়ে গেছে সৌন্দর্য আর কয়েকটা দিনের খাবারের ঠিকানা। মনে মনে দু:খী শালিককে ধন্যবাদ দেয় সুখী শালিক। দু:খী শালিকের হয়তো জানা নেই কিছুক্ষণ আগেই সুখী শালিক ধরা পড়েছে মানুষ নামক দৈত্যের পেতে রাখা ফাদে! পায়ের কাছে জাল পাকিয়ে মাটির পাহাড়ের গায়ে পরে থাকা সুখী শালিক এখনো সুখী, কারন তার শেষটা শেষ হচ্ছে তার প্রিয় দোতং পাহাড়ে, কোন এক জুম ক্ষেতের পাশে!
©জুলফিকার

1 thought on “একটি সুখী শালিকের গল্প”

মন্তব্য করুন