Skip to content

আপার কাছে চিঠি – রোহন হক

প্রিয় আপা,
আপা তুই ক‌ই?
এভাবেই কি বোন তার ভাইকে ছেড়ে চলে যায়?
জানিস‌ আপা?
বড্ড বেশি মনে পড়ে তোকে।
মনে আছে তোর?
যখন স্কুল থেকে আসার সাথে সাথেই তুই
কাঁধের ব্যাগটা নামিয়ে দিয়ে বলতিস,
“খেয়ে নে হাদারাম”।
তখন খুব রাগ হতো।
আর এখন চাইলেও কেও বলে না।
আচ্ছা আপা এত তাড়াতাড়ি তোর যাওয়ার সময় হয়ে গেল?
এইতো তুই আমায় জোড় করে পড়তে বসাতি।
না খেতে চাইলে জোড় করে খাইয়ে দিতি।
মা মারতে আসলে তুই আমাকে বাঁচাতি।
বাবা রাগ করলে তোর চোখে দেখতাম অশ্রু।
আমি মুছতে গেলেই আমায় জড়িয়ে ধরে কাঁদতি।
আপা তুই কি তারা হয়ে গেছিস?
আমায় দেখতে পারিস?
আপা বিধাতার কাছে কি দরখাস্ত লেখা যায় না?
যাতে বিনীত অনুরোধ করব,
“আমার আপাকে ফিরিয়ে দিন।
নয়তো আকাশের সব তারা
সরিয়ে আমার আপার তারটাই
শুধু আকাশে জ্বলজ্বল করুক।”
জানিস আপা কাজ পেয়েছি।
ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল
প্রথম বেতনের টাকা তোর হাতে তুলে দেব।
ইচ্ছাটা অপূর্ণ থেকে গেল।
আপা জড়বস্তুরা কবে কথা বলা শিখবে?
তোর ছবির সাথে
কথা বলব।
আপা এলাকায় তোকে উত্তক্ত করা ছেলেটা
আজ আমায় দেখে মুখ গুটিয়ে নেয়।
হয়তো মান অভিমান পুষে রেখে
সেও চায়
ফিরে আসুক।
আপা তুই তো অন্ধকার ভয় পেতি।
তাহলে কীভাবে এতদিন অন্ধকারে
পড়ে আছিস?
আপা তুই কি আমার সাথে নাটক করতি?
তুই তো পোকা ভয় পেতি।
তাহলে আজ তাদের সাথে কীভাবে আছিস?
তূই কাঁদা দেখলেই আমার হাত ধরে
হাটতি।
এখন কীভাবে ঐ কাঁদা মাটির
নিচে পড়ে আছিস?
এত কিছুই‌ কি তোর নাটক ছিল?
আপা ভালোবাসা?
সেটাও কি নাটক ছিল?
সন্দেহ হয় থেকে যাওয়ার কথা বলে
চলে গেলি আমায় ছেড়ে।
অনেকে বলে,
“একদিন সবাইকে যেতে হবে।”
কিন্তু আপা তুই তো প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
কীভাবে পারলি ফেলে চলে যেতে?
আপা পরেরবার যদি আবার জম্মাই
বিধাতাকে কঠোর ভাবে বলে দেব,
“ঐ জম্মেও আমি আমার আপাকে চাই।”

1 thought on “আপার কাছে চিঠি – রোহন হক”

মন্তব্য করুন