Skip to content

অভাজনের মিনতি

রথযাত্রা-শূন্য পথ করে হাহাকার,
কোথা সেই অগণিত যাত্রী সমাহার,
পথ ভাবে সবই তার কুকর্ম ফল,
অন্তর্যামী সেই হেতু করিলেন ছল।

বিগ্রহ বসে রথে-সুসজ্জিত রূপ,
অশ্রুতে ভাসে হেরি পথ নিশ্চুপ।
মনে মনে ভাবে সে তাহারই অহং,
সেই হেতু প্রভু দণ্ড দিলেন স্বয়ং।

একাকী চিন্তিত রথ-পথে হেরি যতি,
কে দিবে তাহার চক্রে নিরন্তর গতি !
নিজেরে শ্রেষ্ঠ ভাবি-কি অধম আমি !
ক্ষমা কর মোরে দেব হে অন্তর্যামী।

ভক্ত চিত্তেও হায় অহমিকা বেশ,
তাহারই কারণে আজি এই হেন ক্লেশ,
গৃহমধ্যে বন্দী সবে নাহি কেহ পথে,
প্রণিপাত করিতে নারে প্রভু জগন্নাথে।

পথ বলে ক্ষমা কর-আমি অতি দীন,
বিগ্রহ কহে-মোর দোষ সীমাহীন।
রথের করুণ আর্তি-হে অন্তর্যামী,
আমি অতি মূঢ়মতি-তুমি মোর স্বামী।

বিশ্ব চরাচর কিন্তু নহে অনুতপ্ত,
দুষ্কর্ম পাপাচারে রহে সবে লিপ্ত।
হৃদয়ে বন্ধন করে দম্ভের সেতু,
মাগে না প্রভুর ক্ষমা কৃতকর্ম হেতু ।

কহেন দেবতা – রথ,পথ,বিগ্রহ,
আমা বিনা তোমাদের মূল্য কি কহ !
খুশী আমি হেরি তব বোধ জাগরণে,
চিরকাল রহিবে সবে আমার শরণে।

তবে মানবের আচরণে ক্ষুব্ধ অতিশয়,
অনাচার ব্যভিচারে লোভের আশয়।
সংশোধন এবে নহে সমূলে বিনাশ,
কহেন বৈকুণ্ঠপতি প্রভু শ্রীনিবাস।

পরন্তু মর্ত্যবাসী আজও অজ্ঞানী,
পরস্পর সাথে হায় করে হানাহানি।
অহংকার তমসায় ঘিরিছে হৃদয়,
নিকটে আসন্ন বুঝি সৃষ্টির লয়।

অভাজন মিনতি তাই সুধী সর্বজনে,
অহমিকা দ্বেষ করো দূর এইক্ষণে।
নচেৎ শিয়রে জেনো স্থির সর্বনাশ,
দুর্যোগ দুর্বিপাকে পৃথিবীর গ্রাস।

মন্তব্য করুন