Skip to content

কবিতা:মেঘবলিকা

মেঘবালিকার অনেক শখ
নাম করবে লোকে
ঘুমের ঘোরে আকাশ দেখে
ঘুড়ি ওড়ে চোখে—-

লাটাই হাতে অন্য কারোর
সেটাই একটা ভয়—
মেঘবালিকার বয়স বারো
খোঁজে পরিচয়,

পলাশডাঙ্গা গ্রামের মেয়ে
মেঘবালিকা নাম—
দুপুর বেলায় কুড়িয়ে বেড়ায়
লোকের গাছের আম—–

সকাল-বিকাল পড়তে বসে
ঘরের কাজের ফাঁকে—-
দেয় না সাড়া ,পড়ার সময়
বান্ধবীদের ডাকে——

এবার আসি প্রসঙ্গেতে
মেঘবালিকার বিয়ে—-
বয়স বারো, সেদিকে বৃথা
মাথা ঘামিয়ে,

মেঘবালিকা বুঝতোই না
“বিয়ে”কথার মানে—
পুতুল-বিয়ে খেলতো নিজে
সেটাই তখন জানে।

মেয়ে নামের প্রতীকগুলো
স্পষ্ট যায় না দেখা—
মেঘবালিকা তখনও দেখে
আকাশ একা একা,

বিয়ের দিনে বধূর সাজে
মেঘবালিকা ভাবে—–
পুতুলরা তো সাজতে চায়নি
বিয়েতে এইভাবে—?

আরও কত প্রশ্ন সেদিন
মেঘবালিকার মনে—–
পাত্র ছিল পোস্ট-মাস্টার
বিয়ে হবে যার সনে।

মধ্যবিত্ত ঘরে সেদিন
জ্বলে ধারের আলো—-
গ্রামের লোক নিমন্ত্রিত
মন্ত্র শুরু হলো—-

অনেকটা সেই গল্প যেন
শুনতো যা রোজ রাতে—–
রাজার-কুমার আসবে ঘোড়ায়
বিয়ে হবে তার সাথে—–

বাস্তবে তার উল্টো হয়ে
লাটাই হাত বদল—
আকাশ-ঘুড়ি-রঙিন স্বপ্ন
করেনা আর ঝলমল।

পোস্ট-মাস্টার ঘরণী সে
পড়া বাতিল আজ—-
বারো বছরের মেঘবালিকার
ঘোমটা পরা সাজ—–

অনেক বারণ–অনেক শাসন
পুতুল খেলা নয়—-
মেঘবালিকা বুঝলো ক্রমে
নিজের পরিচয়।

মেঘবালিকা আকাশ দেখে
ঘোমটার ফাঁক দিয়ে—-
অনুশাসন আর স্ত্রী-র ভূমিকায়
অবতীর্ণ হয়ে——

ঘুমের ঘোরের নীল ঘুড়িটার
লাটাই পরের হাতে—-
আপোষ করে মেঘবালিকা
সমাজ—স্বামীর সাথে।

মন্তব্য করুন