Skip to content

জ্বরের কান্ড – প্রসূন গোস্বামী

অসুখটা আসে, ডাকেনি কেউ, গভীর এক রাতে,
গাছের পাতারা কাঁপতে থাকে, ভয়ে ত্রস্ত বাতাসে।
দেহে লাগে ঢেউ, মানুষের মতো, তবুও অদ্ভুত,
হঠাৎ গজায় ডানা, উড়ে যায় সে, যেমন কোনো ভূত।

সে কানেতে বলে, “আমি প্রেম নই, তবুও প্রেমের মতো,
তোমাকে কাঁপাব, বুকেতে জমবে এক পাহাড়ের ক্ষত।”
মায়ের রান্না অচেনা লাগে, লবণে চিনির খুন,
গরম জলেতে পুড়ে যায় সব, জ্বলে ওঠে ফাগুন।

গভীর রাতে, শিরা-উপশিরা ডাকে এক গোপন সভা,
“এ রাজ্যের নিয়ম বদলাতে হবে,” সে যে বড়ো শোভা।
ঘড়ির কাঁটা পিছিয়ে চলে, জ্বরের নিয়ম বড়ো,
বইয়ের অক্ষর পালায় ভয়ে, সব যেন জড়ো।

ছাদেতে ওঠে লালচে চাঁদ, “আমি তোদের নানী,”
বলি সে তো নানী নয়, সে আসলে এক ছায়া অভিমানী।
দেয়ালের ফাটলে একটা কাক, কবির অভিশাপ,
জ্বর হাসে চেয়ারে বসে, “ওরে চোর, করিস না পাপ।”

বালিশটা বলে, “আমি এখন রাজা, এ আমার সিংহাসন,”
জেগে ওঠে এক স্মৃতি, মন করে কেমন কেমন।
ডাক্তার আসে না, বলে, “এই জ্বরে কবিতা লিখো,
তবেই না রোগ সারবে, কবি, তবেই না তুমি শিখো।”

জ্বর হাসে, বলে, “আমি যাব, তবে এই ঘরে
চিরকাল ভাড়া থাকব, তোর চিন্তার ফ্ল্যাটে, মনের পরে।”
পকেটে রাখি একখানা গল্প, “জ্বর ছিল আসলে ছায়া”,
নিয়তি হাসে, বলে, “আর বুঝি নেই কোনো মায়া!”

মন্তব্য করুন