অনামিকা শুয়ে আছে ঘাসে
পুরাতন ডিমের খোসার মতো দেহ তার,
বালির কণার সাথে উঁকিদেয় আকাশে আকাশে;
মাঠের অঙ্গনে হয়েছে যে তার সৌষ্ঠব বোধের অবতার-
শান বাঁধা কবরের পাশে।
সময়ের পরিধির দুরতম কোণে
অনেক বেদনা নিয়ে মনে
জেগেছিল একদিন এশিরিয় কালে
সময়ের সফলতা বিফলতা হাতে গুনে গুনে
নিরাসক্ত হীম ঠোঁট অটুট সাহস নিয়ে প্রাণে
স্তনকর দিয়েছিল দৈত্যের দু-হাতে তুলে
হাড়ের মতন সাদা কোমল চিবুক
ভাতের অভাব শুধু ধুকপুক
জেগেছিল একদিন অনুত্তীর্ণ কালে।
দেহ হাড় ক্রমান্বয়ে হয়ে গেছে ক্ষয়
এসে অদ্ভুত আলোর সোনালী প্রলয়
কবরের বলয়ের বেড়ে গেছে দাম
শহর হয়েছে সব গ্রাম
ষাট লক্ষ মূল্য শতকের অন্ধকার ঘরে
শুয়ে আছে সে বালিকা
শত বছরের সুপ্রাচীন তমালিকা
একদিন অজস্র ক্ষুধার নিরন্ন উদরে।
ষোলতলা ভিত যার উঠেছে কবরে।
গিমাশাক নেই বুনো ফল সেও গেছে মজে
বানানো পাঁচন লেগে আছে যাদের মগজে
সেই সব অতীতের ছেলেদের শরীরের মতন
ঘাসের স্তুপের মতো নেই আর বালিকার মন
অনুভূতি হীম হয়ে চোখ গেছে বুঁজে
বাবুদের গরুর রাখাল নিয়ে অবুঝ নয়ন
আসে না তো বহুদিন সৎমার পীড়িত গোপন
বালিকার খোঁজে।
পৃথিবীর সব আলো নিভে গেলে শেষে
দুরতম বন্দরে অচেনা জাহাজের বেসে
এসে যাবে বালিকারা গিমাশাক, থানকুনি কুড়িয়ে আঁচলে
শুধু তাদের বুকের গান শুনে নেব বলে
পথের ভেতর আমি আজো ডুবে থাকি
সূদুর অতীত বালিকার মতো,
গভীর… একাকী।