( উৎসর্গ: রিফাত মুনীরকে)
অমন তো কত দেখি অধরের কারুকাজ !
বিতর্কিত বিধাতার সৌন্দর্যচেতনা
হেসে ওঠে কত মুখে!
কাজলের পাড় ছুঁয়ে কত চোখে ফুটে ওঠে
ভূমধ্যসাগরের স্রোত ঢেউ
পাড়ি দেওয়া
নেফারতিতি আলো!
গন্দমের বন থেকে
আদিম সড়ক বেয়ে
উঠে আসা
এই আমি— টাইবাঁধা প্রাণ
সেসবেও যথারীতি মুগ্ধ হয়েছি;
কিন্তু হে বিদগ্ধ অধ্যাপিকা,
আমার যে বাড়তি পিপাসা;
তৃষ্ণার সিলেবাসে–
আমার যে রয়ে গেছে–
বাড়তি একটি আলাদা অধ্যায়!
বাতাসের টোকা লেগে সুরাইয়া-অধর থেকে
ঝরে পড়ে
বোদলেয়ার–কীটস—এলিয়ট–
রবীন্দ্র-নজরুল আর
বিমর্ষ বিটনিক জীবনানন্দ দাশ;
কখনো-বা
মাহমুদের কালের কলস থেকে
ঢেলে দাও
মন্ত্রপূত কর্পূর গন্ধের বিন্দু
ফোঁটা ফোঁটা রঙিন বাসনা;
মারবেল-বালক আমি আবুল হাসান–
ফিরে গিয়ে স্বপ্নমাখা পুরোনো অভ্যাসে
কোঁচা ভরি—-
কৈশোরের জুয়াখেলা হাতে,
ভাবি নাকো—
আমাদের অভিন্ন, না পৃথক পালঙ্ক;
নন্দিনী ভাবনা এসে দোল দেয় সুপ্রভাতে
অনুরাগের গন্ধঘন চিন্ময় বাগানে
পুরাতন মালী আমি,
শীতের নিঃশ্বাস থেকে
ছেনে নিই
একমুঠো বসন্তের বাও;
কবির চুম্বন চায়—
বৈদগ্ধের রেণুমাখা আধভেজা ঠোঁট
কবির হৃদয় চায়–
জোয়ার ভাটায় স্নাত
সাগরের বুক দেখা মেঘনার চোখ;
তো যে-বালক কুল চায়,
তুমিই বলো,
ঢিলহাতে সে আর যাবে কই কুলতলা ছেড়ে !
আর তোমার সবি তো আছে যা আছে আর
প্রসাধিত লক্ষ যুবতির
মাটির পিপাসা নিয়ে জন্মহেতু
মৌরসি উঠোন ঘিরে
আমিও তাই রচিনিকো জলবিমুখতা।
না, না, প্রেমের সাম্রাজ্যে আমি তুলতে চাইনি
কোনো কুতুবমিনার, ওঠেওনি;
আসলে সেই সাধ বা সাধ্য,
কোনোটাই ছিল না আমার।
তবু আমার উঠোনে ওড়ে—
অদ্ভুত রঙের এক পিপাসার ফ্লাগ
যা তুমি দ্যাখোনি, কোথাও–
বাস্তবেও ঘুরে এসে–
কিউপিডের অর্ধেক সাম্রাজ্য।
যদি তা না হতো,
তবে হে শ্যামাঙ্গী অধ্যাপিকা,
তোমাকে তো নয়,
আশরীর বান ঢাকা আষাঢ়ের নদী হয়ে
যে-যুবতি হেসে ওঠে
কবিতার ব্যাখ্যা শুনে তোমার ক্লাসে,
যাকে ঘিরে উঁকি মারে
বিমুগ্ধ সতীর্থের এলোমেলো চোখ,
হয়তো তাকেই চেয়ে
ফিটফাট,
দাঁড়িয়ে থাকতাম রোজ—
তোমারি কলেজ ছোঁয়া—
ফ্রয়েডীয় রাস্তার বেণীমাধব মোড়ে।