আমি সেই সুনীলের মা
দমদমের কাছে এক বস্তিতে থাকি
আমার ছোট ছেলে সুনীল ছিল কাজীর হিসাবরক্ষক
তাদের পৈতৃক ভেড়িতে শাসনের তেহাটায়
দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত কর্মচারী ; কাজী সাহেব নিশ্চিন্তে
পড়ে থাকেন বারাসাতে ; আশির দশকের মাঝামাঝি
এক অভিশপ্ত রাতে পাঁচজন বিশ্বস্ত পোষ্য লালনিশানী
শোলে সিনেমার ঢঙে , ‘ঐ দুটো হাত আমাদের দে’
তারপর কব্জিকাটা দুহাত বুকে চেপে
ঘোষপাড়া মোল্লাপাড়া যেখানেই গিয়ে শুধু একটা
বাঁধন দেওয়ার আকুতি নিয়ে ; বোবা দর্শক
সহানুভূতি দেখিয়েও অক্ষমতা
হার্মাদদের এগিয়ে আসতে দেখে
সুনীল রাতের ঘুটঘুটে আঁধারে কোথায় মিলিয়ে যায়;
আমার মায়া ভরতের উপরে , তেঘরিয়ার যে ভরত
সুনীলকে কাজীর কাছে কাজ জুটিয়ে দিয়েছিল
অথচ বেচারা ভরত ! আমার ছেলের পরেই
ওর একটা চোখের তারা সুনিপুনভাবে কাস্তে
দিয়ে উপড়ে নিয়েছিল । ভোরের অনেক আগে
আমার ছেলে দেখে সে মরেনি তবে বাঘের বাসা
শাসনের গোরস্থানে পড়ে আছে । সমস্ত প্রাণশক্তি নিঙড়ে কোনমতে ভোরের আলোফোটার আগে খড়িবাড়ি হয়ে এক হাসপাতালে ;
কাজী সাহেবের আনুকূল্যে
সুনীল সুস্থ , ভরত ও আমার ছেলে দুজনেই বেঁচে
এই অভাগী মায়ের মতো । আজ যখন দেখি
সেই এক এলাকার একই লোক সব সবুজ সবুজে
একাকার তখন হাসবো না কাঁদবো ভেবে পাইনে ।