শঙ্খনদের ভাঙাগড়া
——-
রমেন মজুমদার
আমারা আছি কোন যুগে ?
আমিও ভাবছি তাই…
বোধ কী নেই মোড়ের দুষ্ট ছেলের
হ্যাঁ রে হ্যাঁ–
নম্র বুকের লোশম পূর্ণ পাটা ।
উটকো চুলের কৈজুরি ছাট
হাঁটুর সমান বয়স
তাইতো…
সেই ছেলেটার এত বড় সাহস ?
হালকা গোঁফে কালির মত শ্রী !
শঙ্খনদীর তীরে বসে যে বালিকার দল
খেলছিল খেলা;
তাদেরই একজন,
দগ্ধ বেলায় হারালো সম্ভ্রম
দগ্ধ হলো কালবেলাতে কষ্ট স্রোত
সইল সে তার কচি বুকের উপর।—১
******
তপ্ত লোহার অগ্নি যন্ত্রনায়!
জ্বলে পুড়ে ছাই হলো অঙ্গার
হায় বিধাতা!
কী ছিল তার পাপ !
তখন তুমি নব্য কুঁড়ির নম্র লাজুক লতা
নব্য সলাজ;ত্রাসপূর্ণ চোখ;
যুক্তবেণী বাম উরোজে ঢাকা
নেইকো তখন রাতের পূর্ণচাঁদ ।
সবে ঘনিয়ে বিকেল এলো,
ক্যাফরি পড়া লং কামিজে ‘ সন্ধ্যা,
নামটি বড় মিষ্টি…
তোমার ভালে নামলো তিমির ঢেলে;
সেই তুমিতে আর তুমি নেই…
যা ঘটার তা ঘটলো।
******
স্মৃতির চিহ্ন ভীষণ দেখি কষ্টের!
আমরা খেয়েছি বোধের মাথামুণ্ডু;-
শব্দ শুনি কান পাতলে সমাজে
একী!
নিত্য অহরহ…
খাচ্ছে মানুষ চিবিয়ে মাথা নিজের (!)
ভালোবাসায় ঘুণ ধরেছে তবে।
সেই তখনে নদীর বুকে ঢেউ…
তুলছে যারা কালকুহুরে কালো কেউটে,
ফর্সা মুখে হালকা দাড়ির চাপ;
নির্বোধ শুঁয়োর সুখছে কচি গাল।
লাগলো বুঝি কলঙ্কের দাগ গায়ে ?
গাছের সাথে সখ্য করে সঙ্গে ওড়না দড়ি!
কী,
নিভলো বুঝি বাতি!
দুষ্ট বায়ু বাও কুড়ালি উড়ায় যেমন কুটো,
ঠিক তেমনি ;
উড়িয়ে নিল ঈশ্বরী লাজটুকু ।—৩
*******
মেঘের সাথে পাল্লা দিয়ে বৃষ্টি;
ঝড় তুফানে ভাঙলো সাধের সিঁড়ি!
সেই সিঁড়িতেই চালতা গাছের
দোলানো ডাল,
মিশছে শঙ্খনদে ।
যৌবনামুখ! লালটুকটুক মিষ্টি চেহারা;-
কী জানি নাম ?
সন্ধ্যা নাকি রাত ?
আমাদের ঝরছে গাছের পাতা;
তাতে সমাজের কি এসে যায় ?
এবার তাকাও দেখি,
সেই সে নদের মত হাজার নদের তীরে;
ঘর ভাঙা সুখ কচি কচি ডালিমরাঙা মুখ
যায় ঝরে যায় অকাল বোধনে!
*******
আরও কত দেখবো ;
ওই রাস্তাতেই পাড়ার মোড়ের মাথায়,
টাইট জিন্সে বুক ফুলিয়ে বোতাম ছাড়া-
বুকের পশম মুক্ত করে
মুখে নিকোটিনের গন্ধ!
বিপরীত কিছু স্রোত !
প্রতিকূলে না অনুকূলেও ধায়…
কিছু উগ্র ষোড়শীরাও চায়–
আসুক স্রোত বুক পেতে তা’ নিব।
তখন তুমি কী উত্তর দিবে ?
শঙ্খস্রোত বইবে দুকূল ধেয়ে
একতরফা দোষ নাইবা দিলাম তবে;
নিঃশ্বাস ফেলতে যেটুক সময় পাও…
তার ভিতরেই সন্ধিমিলন কষ্ট ও লজ্জা
অসময়ে গ্রহণ লাগে চাঁদ-সূর্যকে নিয়ে।–৫
******
হয়তো হবে তাই…
নম্র আঙ্গুল পোড়ায় কাব্যসুখ !
পোড়াও সমাজ দগ্ধ দিঘিরপাড় !!
সেই নদীতেই আবার সাঁতার কাটা
শঙ্খ নামের বিচিত্র এক নদ
কত মৃত্যুর লাশ ভেসে যায় তাতে।
ভাবছ বসে বসে,
অহরাত্রির সেই আমিটার কচিমুখ !
স্মৃতির পাতায় রোজ নামচা যেমন;
পাচ্ছেনা জল,পাচ্ছেনা তল, বৈঠা ছাড়া
তুমুল জোয়ার ভাঙনের হাতছানি!
দুকূল বন্যা ছুটছে চতুর্দিক।
পূর্ণিমার চাঁদ রাত্রি বেলায় ওঠে
তখন তুমি;
সেই আলোতেই করছ প্রণয় খেলা
হটাৎ মেঘের গর্জন;
ঝাঞ্ঝাপূর্ণ বাও কুড়ালির আঘাত
সইতে হয়;সত্ত্বাতে তার লাজের মাথা খেয়ে।
******
কী,বুঝতে পারছ ?
মুষ্টি বদ্ধ হাত;
কামড়ে ধরা জিহ্বার উপর দাঁত
জীর্ণ আঁচল গড়াগড়ি খায়…
নির্বোধ সেই সুখ !
পায়ে পায়ে জড়িয়ে হোঁচট খায়।
শ্মশান পোড়া গন্ধ কী পাও তোমরা ?
সিঁদুর ছুঁইয়ে রক্ত ঝরাও কেন ?
দীর্ঘ যাত্রার প্রতিফলন মন্দ
ওদের সিঁথি পুত্তুলিকায় পৌরুষ খর্ব সুখ!
কারণ,
শঙ্খনদীর মরণ জ্বালায় কান্না বহুদূর।
সমাপ্ত।।
শিখামন্দির।।
01/11/2021
*******