Skip to content

মায়ের কান্নাঃ- পর্ব-৪- হাকিকুর রহমান

মায়ের কান্নাঃ-৪

ডাইনী রানী আফ্রিয়ার কোন ছেলেপুলে নেই। তাই সেই দেশের রাজা তার উপর ক্রুদ্ধ ছিলেন। শুধু রাজাই নয়, ঐ দেশের প্রজারাও রানীর উপর বেজায় ক্রুদ্ধ। নানান রকম জাদুটোনা করা সহ এমন কোন খারাপ কাজ নেই যে রানী করেনা। তাই সবাই রেগে গিয়ে তাকে ডাইনী রানী বলেই ডাকতো। নিজের ছেলেমেয়ে নেই দেখে, অন্য কারও ছেলেমেয়ে দেখলেই কালো যাদু করতো। আর তারা নানান অজানা অসুখে পড়ে, ভুগে ভুগে মারা যেত। রাজ্যে জুড়ে দিনে দিনে নেমে এলো শোকের ছায়া। কারও ঘরে সুখ নেই, সবাই ডাইনী রানীর ভয়ে সন্ত্রষ্ট। কবে যে কার ঘরে বিপদ আসে, কেউ জানেনা। অবশেষে একদিন রাজা সভাসদগণকে নিয়ে বসলেন। এর কি বিহিত করা যায়। সবাই সমস্বরে বল্লেন, ডাইনী রানীকে রাজ্য থেকে বিতাড়িত করা হোক। দ্বীপ নির্বাসন দেয়া হোক।

কি আর করা। রাজা অনেক চিন্তা ভাবনা করলেন। মনের দুঃখে একদিন সিদ্ধান্ত দিলেন যে, রানীকে সাগর পেরিয়ে এক নির্জন দ্বীপে নির্বাসনে পাঠানো হোক। রাজার হুকুম মোতাবেক, একটা বড় ডিঙ্গীতে করে সাগর পাড়ি দিয়ে, এক নির্জন দ্বীপে ডাইনী রানীকে রেখে আসা হলো। সাথে দেয়া হলো পর্যাপ্ত খাবার আর পানীয় যাতে করে তার খাবারের কোন রকম অসুবিধা না হয়। কিন্তু, ডাইনী রানী বলে কথা। ফেরার পথে, ডাইনী রানীর অভিশাপে পড়ে, ডিঙ্গীটার নাবিক সহ যে কয়জন সৈন্য সামন্ত ছিলো, এক অচেনা ঝড়ের কবলে পড়ে ডিঙ্গীটা ডুবে যায়। এত প্রকান্ড ঝড় ওঠে যে কেউ আর বেঁচে বাড়ি ফিরে যেতে পারেনি। রাজ্যে সেটা আর একটা নতুন শোকের জন্ম দিলো। রাজ্যের কেউ জানেনা, ডাইনী রানী এখন কোথায়, আর সেই ডিঙ্গীর আরহীদের কি হয়েছিলো।

ডাইনী রানী আফ্রিয়া তার কালো যাদুর বলে, ঐ পুরো দ্বীপটাকে তার নিয়ন্ত্রণে এনে ফেলেছে। কেউ সেখানে তার অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করতে পারেনা, আর বেরুতেও পারেনা। আর ডাইনী রানী তো বসে নেই। তার কালো যাদুর বলে, রবিনকে দিয়ে আশে পাশের আরও অনেক রাজ্যের এগার বার বছরের ছেলে মেয়েদেরকে ঐভাবে ভুলিয়ে এনে এই দ্বীপে বন্দী করে রাখে। বলে, আমাকে রাজ্য ছাড়া করেছিস্, তোদেরকেও শান্তিতে থাকতে দেবোনা। তখন থেকেই সবাই কেমন যেন তটষ্থ থাকে, কে যে কার সন্তান হারায়, কেউ সঠিক করে কইতে পারেনা।

আর ঐ ছেলে মেয়েরা কিন্তু এখানে ঠিক বন্দী নেই। সবাই সারা দ্বীপ খেলে বেড়াতে পারে। খাবারের কোন কমতি নেই। শুধু, একটা খাড়ি আছে। খাড়ির পারে কেউ যেতে পারেনা। সবাইকে নিষেধ করে দেয়া আছে। সবাই জানে যে, ওখানে গেলেই বিপদ! (চলবে-৫)

মন্তব্য করুন