বৃষ্টিভেজা এমন এক দিনে
মাটি ছুঁয়ে ভেসে ওঠে ভেজা গন্ধ,
কাঁচা রাস্তায় কাদায় পদচিহ্নরা
ছড়িয়ে পড়ে নিঃশব্দে।
ঝাঁকে ঝাঁকে হাঁসের ছুটে চলা,
শ্রাবণের হাওয়ায় পাতা ওড়ে, দূরে।
বৃষ্টির আস্তরণে দূরের থেকেও দূরে কোথাও,
হারিয়ে যায় ছোট্ট গ্রাম।
সে গ্রামের সবুজ মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে,
মানুষ ভুলে যায়
সে শহরের বাসিন্দা নয়,
তার গায়ে এখনও গ্রাম পোঁতা আছে।
তার বুকের এক কোণে, হৃদয়ের শীতলতা
দোল খাচ্ছে, ঠিক যেন ভিজে যাওয়া কদম ফুলের মতো।
ঝাঁকে ঝাঁকে হাঁসের ছুটে চলা,
ঠিক যেন
স্কুল ছুটি হতেই দৌড়ে পালানো বাচ্চাদের মতন।
গাঁয়ের বৃষ্টি মানেই পুকুরে থৈ থৈ জল,
বৃষ্টির ফোঁটার আছড়ে পড়া পুকুরের জলে।
মাছ ধরার তাড়াহুড়া, হিড়িক লেগে যাওয়া।
কোমল হাতের ছোট্ট বালকের হাতে ছিপ আর তোষামোদ।
ছিপটা জলে ছুড়ে দেয়ার পর,
তার বুকের ধুকপুকানির মতো পাতাকাঠি নড়েচড়ে উঠলেই
জোরে টান।
বৃষ্টি মানেই,
জড়সড় হয়ে মা’য়ের কোল জুড়ে জড়িয়ে থাকা এক শিশু,
ভেজা জানালার পাশে দাঁড়িয়ে,
বজ্রধ্বনিতে কেঁপে ওঠা কিশোরীর
অচেনা ধুকপুকানি।
এইসব দিনে গাঁয়ের বৃষ্টি কেবল বৃষ্টিই নয়,
বরং এঁকে যায় শত গল্প,
স্বপ্নে বুনে, আবার ভাঙে অবলীলায়।
গল্প লেখে গল্প আবছা হয় ভারী বৃষ্টিপাতে।
সে গল্গেরা পৌঁছে যায় বাজারের ভীড়ে।
সবচেয়ে জমজমাট তখন,
বাজারের সেই চায়ের দোকান।
যেখানে ধোঁয়া ওঠা কাপে চায়ের চেয়ে
গল্পগুলো আরও গাঢ় হয়।
আর অজপাড়াগাঁয়ের সেই আড্ডাগুলোই,
হয়তো সবচেয়ে নির্ভেজাল সত্য।
খাদহীন সুখের বুনন।