কোমলতা নয়, ভালোবাসাতেও নয়,
নেই কোনো পারিপার্শিক ভয় ;
নির্ভীক বুকের ঝলকানিতেই বলে যাব,
দুর্বার স্রোতে বহমান বৃহৎ পাথরের আঘাতে
যেমন দু’পাড় ভাঙে, পরতে পরতে,
তেমন ভাবেই ভাঙব, যত অশুভ বিবর্তন।
যে আবর্তন হরণ করছে, প্রতিনিয়ত,
আমার মায়ের সম্ভ্রম,
অনবরত ঘটাচ্ছে চাক্ষুস মাতৃধর্ষণ,
সেই ‘মা, আমাদের মাতৃভাষা, বাংলা’।
এই দর্শনেই আমাদের বড়ো হওয়া, যা’ কিছু অর্জন।
সে আবর্তন আজ অপাঙ্ক্তেয়,
আজ আর কোনো বারন শুনব না।
পরোয়াও করিনা, কোনো রক্ত চক্ষুর ভাষা।
আমি মানি না, সেই নীতি,
আমি মানি না, সেই আবর্তনের স্বাধিকার।
গ্রিক দর্শনের গবাক্ষ দিয়ে একদিন,
যে ভাষা দেখেছিল, নবজাগরণের প্রথম আলো,
এগিয়ে ছিল – ক্রমিক সুচারু বিবর্তনের পথে,
গড়েছিল ইতিহাস,
তাঁর প্রতিভূ ভূমিপুত্রদের প্রসারভূমিতে,
তাঁকে আমি শ্রদ্ধা করি,
তার জন্য গর্ব করি, বিশ্বের দরবারে।
আজ লুন্ঠিত হচ্ছে তার সম্পদ,
তাঁর ধাতৃবিদ্যার গুণাবলি,
দয়া, মায়া, নম্রতা, ভালবাসা, ভদ্রতার
আস্তরণ তুলে ফেলে,
আভরিত হচ্ছে, ভয়ে, বশ্যতায়, অপবাদে,
অমার্জিত বাক্যের আধিক্যে।
এই ভাষা, এতই সহজলভ্য নয়,
যে নর্দমায় কুড়িয়ে পাওয়া যাবে;
অপপ্রয়োগে সেই দুর্বার, দুরন্ত নদীরে
পর্যুদস্ত করবে,
অবস্থান্তর ঘটাবে,
পচা শ্যাওলায় ঢাকা এঁদো পুকুরে।
এ বিবর্তন চাইনা,
চায় না কেউই,
মানি না, তার কোন অশুভ আয়োজন,
এ সহজ কর্মও নয় কোনো।
আমি মানি না, কোনো ভণ্ড পথ প্রদর্শনীকে,
আমি মানি না, সে বিষের রূপান্তরকে,
আমি মানিনা, সেই আলোর ঝলকানিকে,
যে আলোতে পথ অস্বচ্ছ হয়,
বিভ্রান্তি ছড়ায়।
@ সুপ্রিয় ঘোষ, কলকাতা
(পূর্ব রচিত)