Skip to content

গ্রীষ্মের নক্ষত্র সমুদ্র – মোঃ আনোয়ার হোসেন চৌধুরী

এক নক্ষত্র সমুদ্রের অতলে ডুবে আছি,
তবুও দীর্ঘ তপ্ত বিরতির পরে-
বৃষ্টি এলে, তৃষ্ণার্ত মাটির-
সুবাতাস নাকে আসে।
চোখের সরসীতে-
জ্বলন্ত কৃষ্ণচূড়ার ছায়া মেখে,
সময়ের লম্বা জমিনে-
পুড়ে পুড়ে গ্রীষ্ম হাসে।
লবণাক্ত স্বাদে গল্প করা দুপুরে,
আপন অভিলাষে।
এখানেও তার ব্যাতিক্রম নেই,
যেনো ফেলে আসা শহরটা সেই।

সেদিনও দেখি স্বপ্নে-
হিজল ফুলের মালায় জড়িয়ে আছো।
যেনো হারিয়েছো কিছু,
বিষন্ন তোমার ভাবে-
দাঁড়কাকটাও ছুটছে পিছু,
গায়ে মেখে মেঘলা রঙ্গের আলো।
স্বপ্নেও তারে লাগছে না কালো।
চোখে চোখ মিলতেই-
ডাকলো জোরালো।
এক ঝাপটায় শিশির-
অথবা বিন্দু বিন্দু ঘাম ঝরালো।
তুমি কি খোঁজায় হেটে যাও,
দাঁড়কাক উরে যায়,
এই নক্ষত্রের সাগরের পাড় ধরে।
যদি আমায় খুঁজো, তবে-
ডাক দিও সন্ধ্যা তাঁরার পরে।

এসেছি ছেড়ে অনেক দূর,
চড়ুইয়ের গান শুনতে।
হাইব্রিড এক গোলাপ গাছের ডালে,
মৌ’র মেলা বসেছে,
চলছে লীলা তারই আড়ালে।
শালিকের দেখা নাই এখানে,
আছে খৈল রঙা অন্য জাত।
তারই ডানায় নেমে আসে ছিটানো রাত।
যেনো চলমান কোন সিনেমার প্রেক্ষাপট।
জীবনটা নয় কোন-
নাও ভিড়ানো জট।

সিনেমার আলোর শরীরে জন্মানো-
চারিত্রিক বৈশিষ্টের স্বপ্ন আমার।
পালাবার কোন উপায় নেই,
এ এক বিশাল অভিনয় খামার।
কোন এক দিন রিহার্সেলে-
পদ্ম পুকুরে ডুবে ছিলাম।
রাক্ষসের প্রাণ হরণে-
ভোমরা তুলে নিলাম।
হারিয়েছি স্বপ্নে অদল-বদল-
মধুমালার দেশে।
অঙ্গুরী বদল,
উত্তরীয় বদল,
উষ্ণতা বদলেছে সৌন্দর্যে।
তবু শহর বদলের প্রয়াসে,
গ্রীষ্মে সমর্পন আমার,
চুক্তিহীন চৌর্যে।

নীল আকাশের কোন শেষ নেই,
অহেতুক মেঘেরা ভেসে যায়,
দূর থেকে যেতে থাকে দুরেই,
আলস্যে ঝরে যায় এই শহরেই।
কল্কা পাড়ের শাড়ি ভেজে,
গোলাপ তোলা রুমাল ভেজে,
ভিজে যায় শহর ভাঙ্গা মন।
ভিজতে থাকে তোমায় ঘিরে-
হিজল ফোটা বন।
যতদিন বেচে আছি,
চন্দ্রমালা ধরে হেটে যাবো-
এই নক্ষত্র সমুদ্রের পাড়ে।
হারাবার কিছু নেই আমার,
বিলিয়ে দিয়েছি সব,
পেয়েছি যখন যারে।

৬ জুন, ২০২৪
মন্ট্রিয়াল, ক্যানাডা।

মন্তব্য করুন