(০১)
কাশফুলের দিনলিপি
-বিচিত্র কুমার
কাশবন বলে— “আমি বাতাসে মাথা নুইয়ে থাকি, তবুও কেউ দেখে না, আমি কীভাবে আকাশ ছোঁবার চেষ্টা করি।”
যারা দেখে, তারা ভাবে— এই তো সাদা ফুলের নরম দোলা, কিন্তু আমি জানি, প্রতিটি দোলায় লুকিয়ে আছে অসংখ্য অসমাপ্ত স্বপ্নের গল্প।
কাশফুল ভাবে সে শুধুই নরম, আসলে তার ভেতরেই রয়েছে আকাশের উচ্চতা।
কাশবন বলে— “আমি তোমার স্বপ্নের প্রতিচ্ছবি ফেরত দিই, তুমি যে নিজের সীমা ভাঙতে ভয় পাও— তা বুঝতে পারো শরতের শেষে এসে।”
(০২)
পাতাঝরার শিক্ষা
-বিচিত্র কুমার
পতঙ্গেরা আসে,
পাতাগুলো ঝরে যায়—
শরতের গাছ কোনো অভিযোগ করে না।
সে জানে, ঝরার মধ্যেই শুরু হয় প্রস্তুতি,
নতুন পল্লবের জন্য
পুরনো পাতার বিদায় প্রয়োজন।
আমরাও তাই—
প্রতিদিন কিছু কিছু হারাতে শিখি,
কারণ কিছু না হারালে,
কখনোই নতুন কিছু পাবার জায়গা হয় না।
(০৩)
শরতের নীলাকাশ ও আমি
-বিচিত্র কুমার
নীলাকাশে কোনো শব্দ নেই,
তবুও সে কথা বলে—
একটা পাখির ডানার ঝাপটায়,
একটা সাদা মেঘের দুলুনিতে।
আমি তাকিয়ে থাকি,
আমার ভিতরের শূন্যতা আর তার বিশালতা
কেমন যেন এক হয়ে যায়।
আমার সমস্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষা
ধীরে ধীরে মুছে যায় ওই নীলের মধ্যে—
শুধু থাকে হাওয়া,
আর আমি।
(০৪)
পাতার মতো ফেলে আসা সময়
-বিচিত্র কুমার
একটি পাতা,
যে জানে সে ঝরে যাবে—
তবুও সে সূর্যের দিকে মুখ তুলে থাকে
শেষ আলোটুকু ধরার জন্য।
আমাদের সময়ও তো পাতার মতো—
জানি, সবটাই ঝরে যাবে একদিন,
তবুও আমরা প্রতিটি মুহূর্তে
আলোর জন্য অপেক্ষা করি।
ঝরা পাতা যখন মাটিতে পড়ে,
তখন সে কাঁদে না—
কারণ সে জানে,
পতন মানেই ফিরে পাওয়া পৃথিবীর বুক।
(০৫)
শরতের ধূসর পাখি
-বিচিত্র কুমার
আকাশে যে ধূসর পাখি উড়ে,
সে কি জানে, মানুষের বুকের ভিতরেও আছে এক আকাশ—
যেখানে পাখির মত উড়ে বেড়ায় অজানা অনুশোচনা।
শরতের পাখি কখনও ফিরে তাকায় না পেছনের পথে,
মানুষও কি পারে তার স্মৃতির কুয়াশা ছাড়িয়ে উড়তে?
তবু প্রতিদিন চেষ্টা করে—উড়ে যায়, ভেঙে পড়ে।
নামঃ বিচিত্র কুমার
গ্রামঃ খিহালী পশ্চিম পাড়া
পোস্টঃ আলতাফনগর
থানাঃ দুপচাঁচিয়া
জেলাঃ বগুড়া
দেশঃ বাংলাদেশ
মোবাইলঃ 01739872753
https://www.facebook.com/profile.php?id=100014642137028&mibextid=ZbWKwL