আঁধারের জাল ফেলে জেগে আছে রাত
পৃথিবী এখন শুধু মহা এক গুহা
আধরাত আলো দিয়ে মরে গেছে চাঁদ
লাশ নিয়ে বসে আছে গুটিকয় চুহা।
নদীর স্রোতের সাথে খেলে সারাদিন
ঘুমিয়ে রয়েছে ঘাটে জলের নায়ক
আবহসঙ্গীতরূপে বাতাসের বীণ
বাজিয়ে চলেছে কোন্ অদৃশ্য গায়ক!
বৃক্ষের বাকল চেরা প্রশাখাকে ভেঙে
বের হয়ে ভাঁজ খোলে নবীন পাতারা
মৃত্তিকার আচ্ছাদন প্রাণপণে ভেঙে
সদলে বেরিয়ে আসে ব্যাঙের ছাতারা।
পিঁপড়ারা খুশি পেয়ে খসে পড়া লেজ
সারসীর ডিম পেয়ে খুশি গুঁইসাপ
নিষিদ্ধ পিয়াস চোষে অধরের স্বেদ
তাপদগ্ধ মাটি ছাড়ে কোষবদ্ধ তাপ।
দুঃস্বপ্নের লিঙ্গ টানে ঘুমের শরীর
তাই দেখে শরমিন্দা জোনাকির চোখ
ফ্যানের বাতাসে মিশে গভীর নিবিড়
জানালায় মাথা কোটে বুকভাঙা শোক।
নপুংসকের ঘরে নাক ডাকাডাকি
সেইফাঁকে পরকিয়া-ঘামে ভেজে ছাদ
অরুন্ধতি জেনে গেছে বিধাতার ফাঁকি
জীবনের পক্ষে হয়ে ডুবে গেছে চাঁদ।
ক্লিনিকের বেডে শুয়ে হার্টের পেসেন্ট
নার্সের নিতম্ব দেখে ঘামছে ভিতরে
ফ্রয়েডের সফলতায় হান্ড্রেড পার্সেন্ট
যমদূত হতভম্ব: এ হয় কি করে!
পেন্টাগনে ক্রিয়াশীল আঁধারের হাত
ডেভিলের ওয়ার্কশপ চালু পুরোদমে
আলোকের ছাদে হবে তামস আঘাত
আণবিক মসলার ঘ্রাণ ওঠে জমে।
সৈন্যদের পাতে যাবে সুরুয়াসমেত
কার মাথা- কার রান-কার পাকস্থলী
শয়তানের খাজিন্দার হাতে নিয়ে প্লে¬ট
জেহোভার সাক্ষী খুশি- হবে নরবলি!
গুয়ান্তোনামোয় থির সূর্যহীন রাতে
সভ্যতা কঁকিয়ে ওঠে বর্বর আঁধারে
শৃঙ্খলিত আর্তনাদ বিপন্ন ভাষাতে
বেজে ওঠে বাদুড়ের বিস্মিত রাডারে।
অবারিত উষ্ণতায় সশস্ত্র মেধার
ষড়যন্ত্র পেকে ওঠে রুদ্ধদার ঘরে
দিন ছিল সাঁঝতক ভাগ ও দ্বিধার
সে-তথ্যও দিয়েছিল নৃপতির চরে।
ঘুমিয়েছে গণতন্ত্র অ্যাফ্রো-এশিয়ায়
হরিণ শিশুর মতো কোমলশরীর
তাই দেখে লোভ জাগে জলে ও ডাঙায়
থাবা আর দাঁত নিয়ে সমান অধীর।
বাদুড়ের পাখনায় সজাগ রাডার
সঙ্কেতের শুদ্ধতায় লক্ষ্য-অভিগামী
পেঁচার নখরে ধরা পড়েছে আহার
প্রকৃতির রণমঞ্চে দৃশ্য মহাদামী।
সবুজের ঘরে শুনে নাকডাকা ঘোর
কুড়াল-করাত মগ্ন পরিকল্পনায়
পাখিদের প্রাণ চায় কাকডাকা ভোর
আঁধারের রাজ্য যেন কালোমাৎস্যন্যায়।
সুনিপুণ জালখানা ঝোলে কড়িকাঠে
পেটে গেছে আহা কত পতঙ্গ ও পোকা
সেই জাল বদলেছে কবরের খাটে
মরণে জীবন খায় জীবনের ধোকা।
ক্লান্তির বেদনা মুছে ঘুমের দু’হাত
বিপন্ন কোমরে গোঁজে মেদের বাহুল্য
কালোবেড়ালের পায় রেডি হয় রাত
ডাস্টবিনে জমে ওঠে কাকের সাফল্য।
রাতের প্রচ্ছদে আঁকা জগতের ছবি
বিধাতার পরাজয়ে উৎসর্গ করা
এই দৃশ্য দেখে নেয় শাপগ্রস্ত কবি
ডিজিটাল ক্যামেরায় যদিও অধরা।
সুবেসাদেকের আলো ফুটবে যখন
ফেরেস্তারা ফিরে যাবে সাতআসমানে
কবি আর শয়তান ঘুমোবে তখন
যমজ ভাইযের মতো একই বিছানে।