Skip to content

কতো গাঁট আমি খুলেছি – শর্মিষ্ঠা মুখার্জী অগ্নিশিখা

কতো গাঁট আমি খুলেছি
কতো গাঁট এখনও খোলা বাকি,
পায়ের নূপুর, হাতের কাঁকন,
গলার হার, কোমড় বন্ধন,
নাকছাবি আর কানের দুল,
বিনুনি ভেঙে খোলা চুল-
সব খুলেছি একে একে।
আর গহনা সব খুলতে খুলতেই
নিয়ম-রীতির নানা বন্ধনে
বন্দী হয়েছি আমি।

এখন হাত-পা সব আটকে পড়েছে
আটকে পড়েছে মন ও,
কতো গাঁট আমি খুলেছি
আরও কতো গাঁট খুলবো এখনও।

অঙ্গে অঙ্গে আমার রূপ তরঙ্গ
আমার মুখের নকশা,
আমার অপলক চকিত নয়ন
আমার কন্ঠস্বর, আর না বলা কথন,
আমার দিনের স্বতঃস্ফূর্ততা-
রাতের রঙিন স্বপন
সব গাঁট ছিঁড়েছি আমি।

এখনতো আর গো নইতো রাজকন্যা
সরিয়েছি আমি মায়ের আঁচল,
জীবনের পথ চলতে ধরে থাকা
বাবার শক্ত হাত।
সোনার পরিধানের খোলস ছেড়ে
রূপালী রাংতায় মোড়ানো
আমার সকল দিন-রাত।
কতো গাঁট আমি খুলেছি
কতো গাঁট এখনো খোলা বাকী।

কর্তব্য-দায়িত্ব-মান রক্ষার
নতুন মোড়কে বাঁধা,
আমি শুধুই সাতপাঁকের
এক জীবন্ত গোলকধাঁধা।
দেহের চারপাশে জড়িয়ে রয়েছে
নিয়ম-শৃঙ্খলের বাস্তুসাপ,
বাবার রাজপ্রাসাদ ছেড়ে এসে
আমার পরিণতি মরণকূপে ঝাঁপ।

কতো গাঁট আমি খুলেছি
কতো গাঁট এখনো খোলা বাকী।
নানা সময় নানা সম্পর্কের বাঁধনে
আটক আমার আত্মা,
এক সোনার খাঁচায় বদ্ধ আমি
সোনার বেড়িতেই  পা আটকা।
কতো গাঁট খুলেছি আমি
আরও কতো গাঁট খোলা
থেকে যাবে বাকী ?

আমি মুক্ত করে এই গাঁট বন্ধন   
শুধু চাই একমুঠো মুক্ত আকাশ  ,
এখন রয়ে গেছে শুধুই ধ্বংসাবশেষ
জীর্ন , ক্লেদাক্ত, মলিনতার বাস   ।

মন্তব্য করুন