যখন প্রেমসমনের কাগজ নিয়ে,
মেঘ পিওন এসেছিলো আমার বাড়ি,
আমি তাকে তোমার ঠিকানা দিয়েছিলাম,
আমি তাকে তোমার নাম বলেছিলাম
আর সঙ্গে দিয়েছিলাম এক গোছা রক্ত করবী।
ঠিক তখন জারুল বনের পাশে তাঁবু গেড়েছিলো
কালবৈশাখী র তাড়া খাওয়া দখিনা বাতাস
সুদীপ্ত শরগাছ তার তিক্ত রিক্ত পাতায় ,
সভা করছিলো বিদগ্ধ জোনাকীর সাথে
বিরোহী হাস্নুহানা ছড়াচ্ছিলো কান্নার গন্ধ বাগান জুড়ে
সুপুরী গাছের আবডালে লুকিয়ে ছিলো বৈশাখী চাঁদ,
ডানপিটে ঝড়ের কথায় লজ্জায় ঝরে পড়ছিলো শিরীষ ফুল,
তারা সবাই তোমাকে তাদের প্রেমিকা হিসাবে কল্পনা করছিলো,
আমি বেশ বুঝতে পারছিলাম, বুঝতে পারছিলাম ভালোবাসা বড় প্রাকৃতিক
চৈত্রের শেষ সন্ধেয়টা যেমন টুকরো টুকরো হয়ে মিশে যায় বৈশাখী আলোয়,
ঠিক সেই ভাবে ,
ঠিক সেই ভাবে তোমার অবয়ব ফুটে উঠতে দেখেছি
ওই দখিনা বাতাসের গায়,
ওই শর গাছের পাতায়
ওই মন্দ্রিত বাগানে,
আমি তোমার উপস্থিতি অনূভব করছিলাম
তৃষ্ণার্ত চাতকের মতো
তোমার হলুদ শাড়িতে লাগা চড়কাঁটার মতো তোমায়
আকড়ে ধরতে ইচ্ছে করছিলো আমার
আমি প্রতি মুহূর্তে ভাবনার স্পর্শে অনুভব করছিলাম,
তোমার সুঠাম কপাল,
দুঃখহীন চিবুক,
লোভনীয় ঠোঁট
এক অনাবিল ভোগমোহের নেশা
আচ্ছন্ন করে নদীর মতো ছুটে যেতে চাইছিল মোহনায়
অথচ তোমার সদর দরজায় তালা ঝুলছিল।