Skip to content

স্বর্ণাভ সেই দ্বীপ – সুপ্রিয় ঘোষ

আমায় সুবর্ণ বিকেল ডাকে,
হলুদ রোদ্দুরে, বহুদূর থেকে,
মায়াময় আলো মেখে,
পদ্মের সরোবর থেকে;
যে ডাক, পারিনা এড়াতে।
আমার ভুরু থেকে বুকে,
বুক থেকে আরও কোথাও অতলে, গভীরে,
অরণ্যের উদ্দামতা জাগায়।
ঠিক যেন সেই দুরন্তপ্রিয়,
সোনালী শীষ নুইয়ে দেওয়া
বাতাসের মতো, শৈশব খেলা করে।
শিশিরে ভিজিয়ে গা’ কত ফুল জাগে,
বকের পাখায় সেখানে সকাল ভাসে।
দোয়েলের শিস, শালিকের ভাষা,
চড়াই, বাবুই, টিয়ে,
কত শত রঙ-ঢঙ নিয়ে, ভরে আছে।
কত স্মৃতি কথা বলে অন্তরে,
থরে থরে সাজানো সে গোলার ভিতরে,
স্বর্ণকণা যেখানে ঘুমিয়ে রয়েছে।
চৈতির তাপে, বোশেখের ঝড়ে,
কতই যে বদল, মন-প্রাণে-রঙে!
নরম পাঁজরে ঢেউ তোলে
পরম আতিথেয়তার ধূপের গন্ধে!
সন্ধ্যার অস্বচ্ছ জীবনে,
সেখানে উলুরবে, শঙ্খধ্বনিতে, সেই ক্ষণে
জাগে মোহময় তৃপ্তির সুর।
সেইটানে মনের মরদ,
ঘরে ফেরে টোকামাথে,
গাছেদের, মাছেদের, পাখিদের -দরদ,
মমতার গন্ধ নিয়ে সাথে।
চোখে ভাসে এক স্বর্ণাভ দ্বীপ,
চোখে ভাসে, নিভু নিভু জ্বলা কুলায় প্রদীপ,
চোখে পড়ে, মানুষের ইচ্ছার স্তুপ,
বিবর্ণ, না-পাওয়ায়, হলুদ পাতার মতো,
পড়ে থাকে, মাটিরই সেই নগ্ন বুকেই।
তবুও অমলিন, সারল্য চেতনার,
তবুও অমলিন সে হাসি, চাপা বেদনার।
বুক ভরে নেওয়া স্বস্তির শ্বাস,
মন ভরে যাওয়া শান্তির অবকাশ,
মৃন্ময়ী হৃদয়ের আশ্বাস,
ডাক দিয়ে যায়।
চোখের পাতায় ভর করে
সবুজের মোহময় তন্দ্রা,
স্বপ্নালু আবেশে জড়ানো,
শান্তির সে স্বর্ণালি দ্বীপে।
চুপি চুপি ডাকে সেই অববাহিকা
প্রতীতিতে যেন প্রকৃতিরই অতিথি সেবিকা।

@সু

মন্তব্য করুন