তোকে তন্দ্রা বলেই ডাকবো।
না জাগ্রত, না ঘুমন্ত
তুই এমনই এক তেপান্তরের নেশা আমার!
নূহের প্লাবনে যখন থৈ থৈ থৈ বিদ্যাপিঠ,
তুই শান বাঁধানো ঘাটে রোদ্দুর হয়ে গেলি!
আমি প্লাবনের জল থেকে উঠে এসে
শুকালাম পবিত্রতা!
তন্দ্রা,
তু্ই তন্দ্রালু চোখে একদিন দেখেছিলি পাহাড়,
আমিও দেখেছিলাম নদী।
তুই চেয়েছিলি বিশাল স্থিতি, ঘন বৃক্ষের ছায়া,
আমি চেয়েছিলাম চঞ্চলা তরঙ্গিনী।
সেই থেকে পাহাড় আর নদীর দূরত্ব
ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
পাহাড়ের কাছে নদীর ফেরার পথ
থাকে না কখনো!
আমাদের দৃষ্টিভ্রম ছিল!
তুই শুনছিস তন্দ্রা?
তোর জ্যুলজি খাতায় আঁকতে আঁকতে
কোষ বিভাজন চিত্র
পাঠাগারে আমি মগজের কোষে রক্ত ঝরালাম!
তুই ওসব দিয়ে দিলি ঝালমুড়িআলাকে
ঠোঙ্গা বানানোর জন্যে।
আমাদের মেধাশ্রম পণ্ড!
সবাই ভেবেছিল আমার
একটা ফুলগাছ আছে নদীর ধারে,
সবাই ভেবেছিল তোর একটা
বটগাছ আছে পাহাড় চূড়ায়।
অথচ আমাদের কিছুই ছিল না প্রচ্ছন্ন!
তোর পাহাড় দর্শন শেষ,
আমি নদী পরিভ্রমণে ক্লান্ত নাবিক!
তন্দ্রার ঘোরে আমরা নিঃস্ব হতে হতে
নিঃস্ব হতে হতে নিঃস্ব হতে হতে
যা রয়েছে তা তোর আর আমার মোহ!
অবয়ব থেকে খসে পড়া ছায়া,
পোশাকের নিচের শরীরি নগ্নতার সত্যাগ্রহ,
কোষ বিভাজন চিত্রপট, মগজে রক্তক্ষরণ,
ঝালমুড়ির পেঁয়াজকাটা গন্ধ আর
ক্লান্তিময় দুই চোখে নেশাগ্রস্ত তন্দ্রা!
আমাদের ঘুমটাও নিজস্ব রইলো না আজ!
বলতে পারিস? আর কতকাল ধরে
শুকাবে পবিত্রতা? আর কতকাল পর আমরা
পাপদুষ্ট হবো আরেক প্লাবনে?
আমরা রয়েছি আজও তন্দ্রালু চোখে
সেই শান বাঁধানো ঘাটের দ্বিপ্রহরে!
অবস্থাদৃষ্টে বুঝলি তন্দ্রা –
অনায়াসে কেউ বলতেই পারে,
আমাদের মতিভ্রম ঘটেছে!