Skip to content

মায়ের ছেলে খোকা — (মাহ্ফুজ নবীন) প্রথম পর্ব

সন্ধা এলেই অনিচ্ছাতেও
খোকা খুলতে বসে, তাহার পাঠ‍্য বই
একটু আগেও দৌড়-ঝাপেতে
খোকা মেতে ছিলো খেলায় হইচই

রোজ হাত- মুখ ধোয়ার
একই চেষ্টা খোকার মায়ের রুটিন থাকে
“যাচ্ছি” বলেই বাঁকানো মুখে
খোকা কত নানামূখী ভেংচি- ভঙ্গি আঁকে

নিজে নিজে একটুও
পড়ে না খোকা, রোজ মাষ্টার লাগে পাশে
কত রাগ- ঝাল থাকে
খোকার মায়ের, তা দেখে খোকা মুসকি হাসে

সোনামনি, যাদুমনি
কতমনি বলেবলে কয়ে খোকার পিছু শেষ
আর একটু খানি খোকা
পড়লেই ছুটি; তোকে আজ খাওয়াবোরে সন্দেশ

খোকা বলে- সত্যি! সত্যি!
মা খাওয়াবে তুমি! আমি যা-ই খেতে চাই আজ?
পড়েবো তবে পুরো চাপ্টার
বলো না মা; “কখন শেষ হবে রান্না তোমার কাজ?”

“যা খুশি কি বলেছি আমি?
এখন শুধু পায়েশ- সন্দেশটুকুই কেবল আছে ঘরে’
মন দিয়ে পড়া মুখস্ত কর
না ডাকলে কিন্তু আসবিনা পড়া না শেষ করে’

“কতদিন মা খাইনি পায়েশ
তোমার হাতের পায়েশ কত্তো দারুণ মজা লাগে”
“তোকে পড়তে বলেছি
পটাতে বলিনি! পড়া হলেই আমায় ডাকিস আগে”

খোকা পড়ছে; চোখ উঁকিতে
ভাবে, মা কখন যে- “খোকা খেতে আয় বলে ডাকে”
একটু পড়ে; একটু তাকায়
খোকা তাহার বইয়ের পৃষ্ঠা- পাতার ফাঁকে- ফাঁকে

পরক্ষুনেই ডাকলোরে মা
“খোকা খেয়েই; পড়তে বসবি কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি!”
এক নিমেষে দৌড়ে খোকা
সামলেতে লোভ; করলো না ভুলেও একটু দেরি

দৌড়ে যেতেই হোচট খেয়ে
খোকা পায়ের গোড়ালিতে, বেজায় পেলো চোট
খোকার চিৎকারে ছুটে এসে মা
দেখে কাঁপছে; খোকার হাত- পা, নাক- মুখসহ ঠোঁট

“বাবা কি হয়েছে তোর!
খোকা কি হয়েছে তোর!” মায়ের আকুতির অশ্রুদ্বার
কেঁদে কেঁদে খোকা, বললো-
ইশারায় “ঘরের ঐ খুটিটাই বদমাশের যত হাড়”

খোকার মা তখন ঠাণ্ডা জলে
খোকার; হাটু থেকে পা অবধি মালিশ দিয়ে মুছে
মায়ের পরম যত্নে অল্পতেই
খোকার পায়ের মস্ত ব‍্যথা- জ্বালা, সবই গেলো ঘুচে

খোকাকে মা বুকে জড়িয়ে
দিলো আদরে, ঘরে যা পায়েশ- সন্দেশ ছিলো সব
খাইয়ে দিলো নিজ হাতেই মা
খোকার মনে- প্রাণে ফোঁটে অভূতপূর্ব আনন্দ উৎসব।

মন্তব্য করুন