আজ আমাবস্যা।আমি শিবু আর মামাতো বোন বাবলি,তিন জনে নানুর নাটমন্দিরের ঝুপরিতে বসে গল্প করছি।
হঠাথ অন্যমনস্ক হয়ে-
বাবলি:ডাবলু,তুই কখনো “চারভুতো” দেখেছিস?
চারভুতো!সেটা আবার কি?
তুই না,কিচ্চু বুঝিস না।চারভুতো হলো; এক বিশালদেহী ভুত,এর সমস্ত শরীরে যেন বাবলার কাটা,আর যখন ইয়া বড় বড় চোখ মেলে তাকায়,তখন যেন আগুনের ফুলকি ছোটে!
ও মা,তাই নাকি?এই বাবলি,তুই এসব জানলি কি করে রে?
বা রে,জানবো না।সেদিন রাতে তুই যখন আমাদের সিদুকৌটর তোলায় আম কুড়োতে গেলি…
হে,তা তো গিয়েছিলুম ই!
হুমম!তখন…
বলনা কি হয়েছিল তখন..
তখন;আমি আর শিবু দাদুর কাছে সব শুনেছি।
কি শুনেছিস তোরা?
বাবলির কোন সারা নেই…
এই শিবু,বল না,নানু কি শুনালে?
ওরা কেউ কিছু বলছে না,এবার বালি ঠোট নাড়ালো
এতক্ষন মনে মনে কিছু একটা ভাবছিলো।
আতঙ্কের স্বরে বলে উঠলে:
ভুত!
ভুত?ধুর,ভুত কী আর আছে নাকি?আর যদিও আগেকার দিনে ছিলো,নির্ঘাত একাত্তরের গোলযোগে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে?
আমার এমন নাদুস নদুস ভাষায় এবার ওরা স্বস্তি ফিরে পেলে বুঝি।
তুই না,সব সময় ফাজলেমি করিস।দাদু বলেছে এখনো ওসব আছে।আর আমি আরো অনেকের মুখেই শুনেছি?
দেখেছিস!
এমন অপ্রতিভ প্রশ্নের জন্য হয়তো ও প্রস্তুত ছিল না,একরকম পাশকাটিয়ে দাড়ালো।
তো কি শুনেছিস? শুনি..
তুই বিলুদের নাটমন্দির দেখেছিস?
এবার গল্পটা মজার জন্য আমিও একান্ত হয়ে গেলাম।
সে কি রে,দেখবো না কেন,সেই সকালেই তো ওকে পিথাগোরাসের উপপাদ্যটা বুঝিয়ে দিলুম,ওর মা টা জোর করলো যে,অঙ্কে এট্টু কাঁচা বুঝি?
হুমম!
তাছাড়া দিন ছয়-সাতেক হলো;আমি আর শিবু যাই বলতে তো ওদের বাড়িতেই।কিন্তু তুই এসবের মাঝে ওকে টানছিস কেন।
ওর যেন আর তোর সইলো না!
ওর পিসিটা!হে,ওর পিসিটায়,ভুত!মোরে ভুত হয়েছে।
একগাল হেসে,ছিঃ বাবলি,আজকাল তুই কেমন আবোল তাবোল বলছিস!
এবার একটু মজা শুরু করলাম!বয়সের দোষ,ক্ষুণসুটি এড়াতে পারলুম নে।সমবয়সী,অথচ খুকির অপ্রিতভ হাসি আর মাঝে মাঝে জাগা ভয়টুকু কোন ক্ষণিকার আবেশ ঘটিয়ে দিলে…
তো সেদিকটায় যাবো না।আর একদিন…
আচ্ছা,মানুষ মোরলেই ভুত হবে।এমন চিরন্তন সত্যে দীক্ষিতো হলি কি করে?
বাহ,তুই সবজান্তা,আমায় বিশ্বেস করছিস নে।তো শুনবার প্রয়োজন-ই বা কি?
দেখ,আমায় ভুল বুঝিস নে।এবার সত্যিই শুনবার নিমিত্ত প্রকাশ করছি।