Skip to content

একটু অন্যরকম অপেক্ষা – অনিকেত দাস

মাঝে মাঝে বড্ডো অপেক্ষা করতে ইচ্ছে করে শ্রী …
একটা ভীষণ অপেক্ষা …
বাস স্টপে তোমার জন্যে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার অপেক্ষা
বারবার ঘড়ি দেখার অপেক্ষা ,
ঘনঘন ফোন করে জিজ্ঞেস করার অপেক্ষা “আর কতক্ষণ ?”
তবু একটা এমনি অপেক্ষা …

ঠিক যেমন মা অপেক্ষা করে
রাত দশটা থেকে এগারোটা, এগারোটা থেকে মাঝে মাঝে বারোটা
তবু বাবার জন্যে না খেয়ে বসে থাকে
বারবার ঘড়ি দ্যাখে
তবু একটুও বিরক্ত না হয়ে এক ভীষণ অপেক্ষায় ….
আমিও তেমন অপেক্ষা চাই শ্রী ,,,

ছোটবেলা দেখতাম আমাদের পাড়ার শুভদা
শীতকাল আসার অনেক আগেই দীঘি পাড়ে গিয়ে বসতো
সবাই বলতো শুভদা নাকি পাগল
তবে আমি শুভদার সাথে অনেক শীতের বিকেলে কাটিয়েছি
কতরকম নাম না জানা পাখি দেখতাম একসাথে …
কত যে পাখি চিনিয়েছে আমায় শুভদা
আমি বলতাম শুভদা তুমি বিকেলে এখানে আসো কেন?
বলতো, এমনিই …
এখন বুঝি সব কিছুই এমনি নয়
শুভদা আসলে অপেক্ষায় থাকতো,
পরিযায়ীদের জন্যে একটা অন্যরকম অপেক্ষা …
যে অপেক্ষার কথা সবাইকে বলা যায়না
শুভদা এখন দিল্লীতে, ইঞ্জিনিয়ার
এখন কার অপেক্ষায় থাকো শুভদা?

আর সেই মামণিদি ,
আমাদের পাশের বাড়িতেই তো ভাড়া থাকতো
মনে পড়ে পূজোর সময় হলেই
আমাদের বাড়িতে যাতায়াতটা বেড়ে যেত
কত অছিলায় যে
আমার থেকে জানতে চাইতো, দাদা কবে আসবে…
দাদা তখন বেঙ্গালোরে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তো
পূজোর সময় বছরে একবার বাড়ি আসতো
দাদা মামণিদিকে ঠিক পাত্তা দিতোনা
তবে আমি বুঝতাম
দুচোখে এক অনন্ত অপেক্ষা নিয়ে
কিভাবে দাদার আসার অপেক্ষা করতো মামণিদি
এখন মামণিদির বিয়ে হয়ে গেছে
দাদাও এখন বাড়িতে
সে দুচোখ এখন পূজোর আগে কার অপেক্ষা করে জানিনা….

এসব অপেক্ষা সময়ের কাছে থমকে গেছে শ্রী
আমিতো সময় নিয়ে খেলি,,,
আমায় আজ একটু অপেক্ষা দিয়ো
অনেকক্ষণ বাস স্টপে দাঁড়িয়ে থাকার এক বিরক্তিকর অপেক্ষা
একটা ভীষণরকম এমনি অপেক্ষা …

মন্তব্য করুন