Skip to content

ইতি – হারানো বন্ধু

অনিমেষ,
তুই ভালো আছিস?
ভাবলি কেন জানতে চাইলাম।
আসলে, বহুদিন গেলে সম্পর্কে বোধয় এমনই হয়।
নতুন কতো পথের সাথে বলতো পরিচয়!

শেষ দেখা তো ছুটির আগে?
বেরিয়ে এলাম আগে -ভাগে?
আমার কাঁধটা ধরে তুই বললি, “ভুলে যাবি না তো আমায়? ”
বলেছিলাম, “সহজে কি পাঁজর ভোলা যায়? ”
তুই না তখন বললি হেসে, ” দেখব কেমন মনে রাখিস! ”
কাছে না থাক, এখনও তুই মনের মধ্যে লুকিয়ে থাকিস!

তখন যদি বোঝা যেতো, স্কুল ছুটি আর শেষ হবে না,
স্কুলের পড়া চুকিয়ে গেল,মিটিয়ে এলেম লেনাদেনা।
এমন করে ছেড়ে দিতেম, বল?
একটা বেঞ্চে, একসাথে আর… বলতে গিয়েই ভরছে চোখে জল।

তোরও বোধয় মনে আছে,
স্কুল পালিয়ে মিত্তিরদের লেবুর গাছে,
কত দিনই চোরা ফলে দিন কেটেছে।
সে যেন এক অন্য ভুবন।
অথচ দ্যাখ, কেউ কাউকে পাত্তা দেয়ার,
সময় পাইনা আমরা এখন!

সেবার যখন পরীক্ষাতে,
ফেল করব সবকটাতে,
তুই না হলে ফেল তো তখন করতেই হতো আমাদের -সব,
সেবার আমরা পাস করেই তো চেঁচিয়ে ধরি,
“তুই থাকলে সব সম্ভব “।

অ্যানুয়ালের আগের রাতে,
হাড় জিরিয়ে জ্বর এলো তোর,
আমরা তখন জেগে জেগেই,
তোর বাড়িতে করেছি ভোর।

এখন সেসব পুরোনো দিন,
অল্প করে যাচ্ছি ভুলে রোজ,
বয়সে আর পথের বাঁকে,
কেউ রাখিনি অন্য কারো খোঁজ।

মনীশ এখন ব্যাংকে আছে,
বিয়ে করল দুমাস আগে,
আনন্দ আর ঝর্ণা এখন,
স্বামী -স্ত্রীতে ডেমরা থাকে।

অন্য কারো ইয়ত্তা নেই,
আমি আগের মতোই আছি,
তুই শুনলাম ইন্জিনিয়ার?
আমার কাজ তো মামলাবাজি।

আচ্ছা অনি, মানুষ এতো স্বার্থপরও হয়?
বন্ধুরা সব আঁকড়ে থাকুক- এটাই উচিৎ নয়?
হয়তো বা হ্যাঁ, হয়তো তা না,
হয়তো পিছুটানেই মানা।
নইলে কি আর এমন দশা হতো!
অস্তিত্ব হারিয়ে এসে,
সেসব দিনের বয়ে বেড়াই স্মৃতির ক্ষত।

চিঠি লিখে মিটবে কি সব মনের কথা?
চোদ্দ বছর একটা পাতায় লেখাই বৃথা।
তারচে থাক – অপ্রাপ্তিদের ইতিই টানি,
তুই ভালো নেই, তুইও কাঁদিস এসব ভেবে -জানি।

আচ্ছা, এখন নতুন জীবন কেমন লাগে তোর?
পাবোই কি ছাই, সব প্রশ্নের হয়ও না উত্তর।

মন্তব্য করুন