অমল রিক্সা ভালোই চালায়।
হাতে পেতলের ঘুঙুর দুলিয়ে দুলিয়ে
টুংটাং নিয়মিত মৃত্যুর প্রতিধ্বনি শোনে।
ঝাঁঝাঁ রোদে পাঁজর বের করা যান ছুটে চলে অলিতে গলিতে
অমল রিক্সা চালায় জোরে।
অমল রিক্সা চালায় জ্বরে।
অমলের সুধা নেই।
আছে গাজার ধোঁওয়া।
ছাতুর সঙ্গে দুঃখ গুলিয়ে খেয়ে ফেলে এক ঢোকে।
কালো চামড়ায় গড়িয়ে পড়ে কালীঘাটের ঘাম –
বিন্দু বিন্দু রাস্তায় পড়ে তপ্ত পিচের ওপরে
অমল রক্তঘাম মাড়িয়ে রিক্সা টানতে জানে।
অমলের খিস্তি এসে আটকে যায় গলায়
কুচ্ছিত অ্যাডামের আপেলে জমা হয় শ্রম
অমল চোলাই-এর অতলে ঠাই খুজে ফেরে
এর জন্য কখনও লাল ব্রিগেড, কখনও সবুজ টুপি
কখন-ও স্ট্যান্ড ফাকি দেওয়া একটা খেপ চুরিচুপি
বাড়তি টাকায় জমে বাড়তি মদের পেগ।
অমলের মন নেই। লজ্জা ঢাকার শরীর নেই।
পাজর-হুড-টায়ার ছাড়া পৃথিবীর কিছু নিজের নেই।
অমলের আছে ছেঁড়া গামছা, আদর্শ হিন্দু হোটেল।
অমলের আছে চোলাইয়ের ঠেক, বাজারের সুইটি।
আর তার যতটা জুড়ে আছে মধ্যরাতের ফুটপাথ ,
সালমান ভাই-ও আছে ততটা ।
ধুমকেতুর মত অমল এপাড়া বেপাড়া চষে বেড়ায়
পয়লা মে-তে, ময়লা ঠোঁটে গাজার ধোঁওয়া ওড়ায় ।
অমল রিক্সা ভালই চালায়।
অমল রিক্সা জোরেই চালায়।