বছর ধরে অপেক্ষায় আছি-
হৃদয়ের হাজারো চাওয়া-পাওয়া, আর বুকের ভাঙা পাঁজরের প্রতিটি খন্ড নিয়ে।
ছেলেবেলায় চৈত্রের মাটি ফেটে চৌচির হওয়া রৌদ্রের খরতাপে দাঁড়িয়ে ছিলাম,
নগেন কাকু এসে বলেছিলেন- আম গাছটার নিচে বসে থাক, আমি তোর জন্য ঘোষ বাড়ির মাঠা নিয়ে আসবো।
চেয়ে ছিলাম নগেন কাকুর পথপানে,
কিন্তু তিনি বাড়িতে এসেছিলেন অন্যপথে অতি সংগোপনে।
সেইদিনও অপেক্ষায় ছিলাম দুপুর পেড়িয়ে বিকাল অবধি।
স্কুলে থাকাকালীন আমার ব্যবহৃত সাদামাটা ক্যালকুলেটর দিয়ে বীজগণিত করতে দেখে মাথায় হাত দিয়ে ছোটমামা বলেছিলেন-
চিন্তা করিসনে আমি তোকে একটা সাইন্টিফিক ক্যালকুলেটর কিনে দিবো।
তারপর বন্ধুদেরটা ধার করে করে কত ক্লাস পাড়ি দিলাম, কিন্তু ছোটমামার সাইন্টিফিক ক্যালকুলেটরের দেখা পেলাম না।
জীবনের জটিল সমীকরণের কাছে সেদিন বীজগণিত হার মেনেছিল।
আবার সেই অপেক্ষার পরাজয় হলো।
হৃদয়ের সমস্ত প্রেম জড়ো করে একটি পত্র দিয়েছিলাম লাজুক মেয়ে সুশীলাকে।
মাস যায়, বছর যায় এই মন সুশীলার দেখা না পায়।
হঠাৎ একদিন সে এসে জানায়-“আমারও মন তোমাকে চায়, কিন্তু তুমি যে নিঃস্ব!!”
তার উচ্চারিত বাক্যটি সেদিন আমার কর্ণযুগল ভেদ করে ভূমণ্ডলের সমস্ত প্রণয়ে কম্পনধ্বনি সৃষ্টি করেছিল।
তবুও অপেক্ষায় ছিলাম তার- সে আসবে ভালোবাসার বরণডালা নিয়ে।
এখনো অপেক্ষায় আছি-
একটি সুদৃশ্য ভূখন্ডের, একটি স্বচ্ছ সভ্যতার, একটি মানবতার মুক্তির পথপানে।
আর অপেক্ষা শুধুমাত্র একটি পরিস্ফুটিত সম্পর্কের।