Skip to content

একটি যুদ্ধ শুরুর ইতিকথা – জসীম উদ্দীন মুহম্মদ

রমিজের চায়ের স্টল থেকেই একটি যুদ্ধ শুরু করব বলে ভেবেছিলাম
তখন মেঘলা আকাশ, দু’একটি বৃষ্টির ফোঁটা নিয়নের আলোয় চিকচিক
করছিলো; বেশ আন্তরিক!
যুদ্ধটা ছিলো সবকিছু বদলে ফেলার
যুদ্ধটা ছিলো সবকিছু বদলে নেয়ার!
যেখানে জীবন যে রকম; সেখানে ঠিক তেমন করে বদলে যাওয়ার!
এখন আমার রীতি-নীতি
আমার চেতনা, আমার আদর্শ
এ সব কিছুই পুরাতন, সেকেলে!
তথাকথিত আধুনিকতার সাথে ঠিক ঠিক মানানসই নয়। বেশ খাপছাড়া!

এই স্বর্ণচোর দ্বাবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে থেকেও
আমি নিজের প্রয়োজনে ইনিয়ে-বিনিয়ে সত্য-মিথ্যার পাথর গাছ বানাতে
পারি না, পারি না পার্টির নাম করে মদ,জুয়া আর নারীর নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে,
পারি না আমার মাঝে আরেকটি আমি’র জন্ম দিতে
পারি না বাপ-দাদার চৌ-হদ্দির সীমারেখা ডিঙিয়ে যেতে!
যখনই ভাবি, তখনই দেখি দু’হাত প্রসারিত করে তাঁরা আমার সামনে
প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়ে আছেন;
এই আমাকে তো অনায়শেই সেকেলে ভাবাই যায়!

পরিবর্তন, পরিমার্জন এবং নতুন সংস্করণের এই যুদ্ধে আমি হব এক
সম্পূর্ণ নতুন আমি;
যে আমি’র কোনো বিবেকবোধ থাকবে না
যে আমি’র কোনো দেশপ্রেম থাকবে না
যে আমি’র নিজেকে পশুর স্তরে নামিয়ে আনতে এতোটুকু দ্বিধা থাকবে না
যে আমি’র কোনো ভালো মন্দের বাছ-বিচার থাকবে না
সেই আমিই এখন হতে চাই সম্পূর্ণ ভিন্ন এক নতুন আমি!!

ভাবতেই ভালো লাগছে এটি এমন কোনো কঠিন যুদ্ধ নয়, আশেপাশে
ভুরিভুরি সহযোদ্ধা আছে! বন্ধু-বান্ধব আছে। প্রতিবেশি আছে। সহকর্মী আছে।
ভাবতেই ভালো লাগছে, এবার যদি ব্যাকডেটেট, সেকেলে অপবাদের কিছুটা
অন্ততঃ গতি হয়!
এই যুদ্ধটাই হবে এই শতাব্দীর সেরা যুদ্ধ!
সর্বোপরি আমার আমি, আমার আপাদমস্তক, সবকিছু, সবকিছু বদলে
ফেলার যুদ্ধ!
অতঃপর বাঁধনহারা এই ভিন্ন আমি
বদলে যাওয়া নতুন আমি, পুরাতন আমিকে আর চিনতে পারব না!

পাদটীকাঃ রমিজের চায়ের স্টলটা এখন আর আগের মতো নেই। তবে আমি আছি
সেই আগেই মতোই! যুদ্ধটা কেনো জানি এখনও শুরু করতে পারিনি।।

মন্তব্য করুন