Skip to content

[A]

লিগ-অব-নেশন
[সিংহ-ইংরাজ॥ হস্তী-ভারতবর্ষ॥ বাঘ-ফ্রান্স॥ ভল্লুক-রুশিয়া॥
হাঙর-ইটালি॥ নেকড়ে-অস্ট্রিয়া॥ শিব-গ্রিস॥
হায়েনা-আমেরিকা॥ ঈগল-জার্মানি॥]

কোরাস :
বসেছে শান্তি-বৈঠকে বাঘ,
সিংহ, হাঙর, নেকড়ে!
বৈষ্ণব গোরু, ছাগ, মেষ এসে
হরিবোল বলে দেখ রে॥

শিবা, সারমেয়, খটাস, শকুনি–
দু-নয়ন লবণাক্ত
কেঁদে কয়, ‘দাদা, নামাবলি নেব
আর রব নাকো শাক্ত!
কেন রেষারেষি দ্বেষাদ্বেষি বৃথা,
দিব ফেলে নখ দন্ত,
তপস্বী হয়ে বনে যাব সবে,
পশুর হউক অন্ত।

ছাগ মেষ সব কে কোথা আছিস,
নিয়ে আয় সব ঢাক-ঢোল,
এসেছেন গোরা প্রেম-আনন্দে
ন্যাজ তুলে সবে হরিবোল!

শিশু-হাসি হেসে নব জিশু-বেশে
এসেছেন আহা বনমাঝ,
অজিন-আসন এনে দে হরিণ,
বসিবেন গোরা, পশুরাজ॥’”

পশুরাজ কন, ‘পশুদল, শোনো,
শোনো মোর বাণী স্বস্তির।’
বাঘা কয়, ‘প্রভু! দন্ত বেজায়
বাড়িয়া উঠিছে হস্তীর।’

প্রভু কন, ‘বাবা শান্তির এই
বৈঠক তারই জন্যে!’
নেকড়ে অমনি কহে, ‘চুপ! চুপ!
শুনিয়া ফেলিবে অন্যে!’

হাবাতে হাঙর খেজুর-গুঁড়ির
লেজুর করিয়া উচ্চ,
বলে, ‘প্রভু তুমি ধূমকেতু-তারা,
এ ভক্ত তার পুচ্ছ!’

প্রভু কন, ‘আহা, এতদিন পরে
মিলিল ভক্ত হনুমান!’
হাঙরের চোখে সাঁতার-সলিল,
বলে, ‘প্রভুর কী অনুমান!’

খেঁকড়ে-কণ্ঠ নেকড়ে কহিল,
‘হায়েনা তো প্রভু আয়েনা!
আমরা করিব হরিনাম, আর
সে নেবে আফ্রিকা চায়েনা!’
ব্যাঘ্র কহিল, ‘সে স্যাঙাত যে রে
আছে রগ ঘেঁসে আমারই!’
প্রভু কন, ‘ওই নোড়া দিয়ে দাঁত
ভাঙিব ভালুক মামারই॥’

হাঙর কহিল, ‘ভালুক মামা যে
ক্রমেই আসিছে রুষিয়া!’
প্রভু কন, ‘আর কটা দিন ব্যাটা
বাঁচিবে আমড়া চুষিয়া?’

লড়ালড়ি করে হায়েনা ভালুক
দুটোরই ধরিবে হাঁপানি,
ছিনেজোঁক রবে লাগিয়া পিছনে,
পাশে চিতে বাঘ জাপানি!

হাড়গোড়-ভাঙা ঈগল পক্ষী
কহিল পক্ষ ঝাপটি,
‘প্রভু তব পিছে চাপকান-ঢাকা
আফগান মারে ঘাপটি!’

প্রভু কন, ‘ওরই ভাবনায় বাবা
ধরেছে রক্ত-আমেশা!
গোস্ত খাওয়ায়ে দোস্ত করিতে
তাই তো চেষ্টা হামেশা!’

শিবা কয়, ‘প্রভু, সুরকি-রাঙানো
টুপি ছাড়িয়াছে তুর্কি!’
প্রভু কন, ‘মজি সংসার-মোহে
ছাড়িল খোদার নূর কি?

কপাল মন্দ! কী করিবে বলো!
অদৃষ্টে নাই ভেস্ত!’
শিবা কয়, ‘যাব আমিই ভেস্তে
তাহলে, বিচার বেশ তো!’

সাত হাত দাঁত বের করে এল
এমন সময় হস্তী,
শুণ্ড বুলায়ে মুণ্ডে কহিল,
‘করো মোরও সাথে দোস্তি!’

‘রে গজমূর্খ!’বলি প্রভুপাদ
পশুরাজ ওঠে গর্জি –
‘কার মর্জিতে তুই এলি হেথা
চিড়িয়াখানারে বর্জি!’

‘গজরাজ আমি, অজ নই’কহে,
অঙ্গ দুলায়ে হস্তী,
‘চিড়িয়াখানার পিঞ্জর ভেঙে
এসেছি বনের বস্তি!’

শকুনি, খটাস, শিবা, সারমেয়
তুলিল ভীষণ কলরোল;
তক্ত প্রভুর তুলি পশুদল
বল ‘বলো হরি হরিবোল!’

[A]

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।